Monday 5 October 2020

হিন্দোল ভট্টাচার্য, চারটি কবিতা, সাহিত্য এখন শারদ ২০২০

 

 


 

চারটি কবিতা 

 

 

 প্রহরী

 

যেন বা শিকারী তার সমস্ত কৌশল ভুলে গেছে 

 

কত টান মারলে তবে ছিলা থেকে হিংসা ছুটে যায়...

 

 

অথচ শিকারী তার শিকারের মুখোমুখি আজ 

 

ব্যবধান সামান্যই, শুভদৃষ্টি হয়েছে চোখের 

 

দুজনেই সম্মোহিত, জীবন ও মৃত্যুর মাঝামাঝি 

 

সরু একটি আলপথের বেশি কিছু নেই ধৃতিরূপা...

 

কেউ কারও চোখ থেকে কখনওই লক্ষ্য সরাবে না 

 

দুপাশে শহর, গ্রাম,  হাইরোড, লাপিস লাজুলি 

 

যতই আসুক, তারা কোথাও যাবে না কোনওদিন 

 

 মৃত্যু যত বনলতা সেন তত তুমি কি আমার?

 

 

 

পুরোহিত

 

আমিও তো দুশ্চরিত্র,  কাকে বলি ওয়দিপাউস? 

 

যেদিকে রয়েছে ঢাল জল যায় সেদিকেই ঠিক

 

পাপ থাকে প্রেমে যদি তবে সেও পুণ্যবান হয় 

 

গভীর জলের মাছ হাবুডুবু খায় না কখনও...

 

প্রকৃত পাপের জন্য কত জন্ম আসে আর যায় 

 

নাড়ি কেটে দিলে তবে শিশুও ভূমিষ্ঠ হতে পারে 

 

কোন ফুলে কার মধু শ্রীমৌচাক কত আন্তরিক 

 

কিছুই বোঝে না কেউ, আমরা তো শুধু মধু খাই 

 

আমিও তো দুশ্চরিত্র, কাকে বলি বাইজেন্টিয়াম? 

 

প্রকৃত পাপের কাছে পুণ্যবান উপাসনা করে

 

 

গাথা

 

আমাদের মাঝখানে ভেঙে পড়ে গেছে সব পুরনো খিলান 

 

বাহারি শৌখিন জানলা, দেওয়ালের চিত্রিত কথন 

 

এখন ধ্বংসস্তূপে তুমি কার মানচিত্র খোঁজ?

 

রক্তের যে কোনও দাগ কিছু কিছু গল্প বলে জানি; 

 

সেসব গম্বুজ নেই, জলসাঘরও নেই 

 

আমাদের মাঝখানে ভেঙে পড়ে আছে সব পুরনো খিলান 

 

এখন কোথাও নেই তেমন পাগল করা বাঁশি 

 

এখন কোথাও নেই অশ্বারোহী ভয় 

 

এসো তবে, মুখোমুখি আবার দাঁড়াই 

 

যেভাবে শহিদ গাছ পাথর ফাটিয়ে ফের মাথাচাড়া দেয়

 

 

 শিল্পী 

 

দূরে আজও ধুলো ওড়ে, গগনঠাকুর যেন তুলি 

 

আকাশ-দিগন্ত যদি এমন সমাধিরঙ হয় 

 

আমাদের ভাগ্য তবে হবে না তেমন ক্যানভাস

 

যেখানে তুমিও নেই, আমিও জলরঙ, তবু,--

 

একটি দৃশ্যের মধ্যে আমরা দুজনই কোনও ছবি...

 

হয়তো বা জানলা খুলে যাওয়া আসা করি দুজনেই 

 

কখনও বা দৃশ্য দেখি, কখনও সে দৃশ্য হয়ে যাই

 

দূরে আজও ধুলো ওড়ে, কনে দেখা আলোয় দেখেছি 

 

গগনঠাকুর আজও আমাদেরই দিকে তবু তাকিয়ে আছেন

 

 

 

No comments:

Post a Comment