Thursday 20 October 2022

শ‍্যামাচরণ কর্মকার, ঋতু

 



 গ্রীষ্ম



গ্রীষ্ম এলে গনগনে রোদ যায় না পথে চলা

গাছের ছায়ায় জিরোয় পথিক,শুকিয়ে আসে গলা।

খটখটে মাঠ, শুকনো মাটি, জলহারানো পুকুর

কোথায় তবে কাটবে সাঁতার? মনটা খারাপ খুকুর।

বৃষ্টিকে চায় পুকুর - ডোবা, ব‍্যাঙ - ব‍্যাঙানি, হাঁস

গ্রীষ্ম এলে স্বস্তি হারায় গরমে হাঁসফাঁস।

                        .........

 বর্ষা



আকাশের মুখ কালো মেঘে যায় ঢেকে

রেগে বলে, বর্ষাটা এলো কোত্থেকে?

সারাদিন টুপ টাপ, বৃষ্টির সুর

পথঘাট থই থই, ভেজে কাছ - দূর।

গাছ হাসে, ফুল হাসে, হাসে মাঠ, চাষী

ব‍্যাঙ বলে, বর্ষাকে কে না ভালোবাসি?

                     ........

 শরৎ



শরৎ মানেই নীলচে আকাশ সোনা রোদের হাসি

সাদা মেঘের পানসি ছোটে, শরৎ বাজায় বাঁশি।

শিউলি, টগর, জুঁই, মালতী ঘুমোয় না কেউ আর

দিঘি-ঝিলে পদ্ম - শালুক ছড়ায় শোভা তার।

হিমেল হাওয়ায় আগমনি, দোলে কাশের বন

দুগ্গা আসে শহর - গাঁয়ে, ফুরফুরে প্রাণ - মন।

                       .........

হেমন্ত



কুয়াশার আঁকিবুকি আকাশটা ধোঁয়া

হেমন্ত উঁকি দেয় পাই তার ছোঁয়া।

শিশিরের ভাসাভাসি লতা ও পাতায়

মাঠেতে নতুন ধান ঢেউ তুলে যায়।

চাষীদের হাসিমুখ লক্ষ্মীর বরে

নবান্ন খুশি এঁকে দেয় ঘরে ঘরে।

                ..........

 শীত



দেয় কাঁপিয়ে ঠাণ্ডা হাওয়ায় শিরশিরিনি হাড়ে

শীতের হাতে জব্দ সবাই গরম পোশাক বাড়ে।

শীতটা এলে কাঁপতে থাকি তবু লাগে ভালো

নলেন গুড় ও পিঠে ছড়ায় মনে খুশির আলো।

রাখাল - বাঁশি, একতারা - সুর হাতছানি দেয়, ডাকে 

বইমেলা ও সার্কাসে যাই , তাই খুঁজি শীতটাকে।

                        .........

বসন্ত



কৃষ্ণচূড়ার ঘুম ভেঙে যায় শিমুল - পলাশ জাগে

বসন্ত এলে ঘুমিয়ে থাকতে কারও বুঝি ভালো লাগে?

আমের মুকুলে ভোমরার সুর, কোকিলের কুহুতান

বসন্ত এলে দুলে ওঠে মন, জেগে ওঠে সব প্রাণ।

রঙের ছোঁয়ায় জাত ভুলে যাই, এঁকে দিই সম্প্রীতি

হোলির সুরেতে ভেসে যায় দেশ গায় মিলনের গীতি।

                        ...........