Showing posts with label বাংলা. Show all posts
Showing posts with label বাংলা. Show all posts

Wednesday, 25 October 2017

বিষাদের মত/ প্রত্যূষ কর্মকার

জলের ধারে এরকম সন্ধ্যে নেমে এলে জলের গভীরে ফুটে ওঠে উদাসীন রাস্তার আলো,
অসংখ্য কাঁপা কাঁপা ঢেউয়ে জ্বলে ওঠে নিয়নের ছাঁচ
নিঝুম পাড়ে বসে আরতির উৎসব মনে হয়,
বেজে ওঠে ঢাকের  পুরনো বোল
এমন সময় খুব নীচু হয়ে মাটির কাছে যেতে ভাল লাগে
পিঁপড়ের মত নিবিষ্ট চলাচলে মনে হয় মিশে যাই মানুষের ধড়াচুড়ো ফেলে
আমার নগণ্য শরীরের ওপর দিয়ে যখন বয়ে যায় উন্মত্ত হাওয়া,
ধূলোয় ঢেকে আড়াল করি জীবনেের অন্তহীন পাওয়া,
ঝড়ে যখন বিশ্বাসের সৌধ টলমল করে ওঠে, 
আমি পিঁপড়ের মত প্রেম দেওয়া নেওয়া করি মুহূর্তের অবসরে

Tuesday, 24 October 2017

ইশকুল বাড়ি / শ্যামশ্রী রায় কর্মকার


এই এত বৃক্ষ এসে দাঁড়িয়েছে নরম বিহানে
পড়ন্ত ইশকুল বাড়ি, ভেঙে আসা বুকের পাঁজর
ওই যায় হেঁটে যায় ছেলেপিলে ছবির উঠোনে
ওরা কি সামান্য বলো? ওরা কেউ স্বপ্ন দেখেনা    
হারিয়ে যাচ্ছে সব স্মৃতিপথ, সোনালি অক্ষর
প্রতিদিন খসে যায় আরও এক আরও এক দিন
হঠাৎ টুকরো কিছু কণ্ঠস্বর হাওয়ার শরীরে
ভাঁজ ভেঙে ঝরে যায় মুছে আসা স্মৃতির ভিতর 
ওই দেখো ঝুরঝুরে গেট ধরে দোল খেলো পাখি
ওই দেখ কবেকার বেঞ্চিতে বসে আছে রোদ
দেওয়ালের দেহ জুড়ে পেন্সিলে শব্দের ভীড়
কারা যেন লিখেছিল? চাইলে কি খুঁজে পাওয়া যাবে?
এই এত বৃক্ষ  এসে দাঁড়িয়েছে নরম বিহানে
হাহাকার মেলে আছে ফলহীন সন্ততিহীন 
ক্ষুধার্ত পাখি এসে বারবার ফিরে চলে গেলো
এভাবেই একদিন পৃথিবী ফুরিয়ে যেতে পারে।

Monday, 23 October 2017

যেভাবে জীবন / পরিচয় প্রধান

দ্যাখো, কি সুন্দর নরম আলোয় সেজেছে এই ভোরবেলা
আজ নিশ্চয়ই কিছু একটা হবে
যত জমানো দুঃখ সব শুকনো পাতার মতো ঝ’রে যাবে আজ ।
কুয়াশার উড়না সরিয়ে ঐ দূরের পাহাড় উঁকি দিচ্ছে পেঁজা মেঘের আড়াল থেকে
ঝাপসা পাহাড়টা বোধয় মেঘ হ’য়ে উড়ে যাবে সাত সাগরের পারে
নাকি মেঘেরাই নেমে আসবে পাহাড়ের পাশে
বলবে, ‘এই যে এলাম, আর কোথাও যাব না’ ।
এসব কিছুই হয়তো হবেনা
তবে আজ কিছু না কিছু একটা হবে ।
নিরালা বারান্দার পাশে একটা ঝাঁকড়া জামরুল গাছ
সবুজ পাতায় হলুদ রোদ্দুর মাখিয়ে
আলোর আলপনা ছড়িয়ে দিচ্ছে নিরিবিলি পথে, এই বারান্দায়
কিছু তো একটা হবেই আজ
কিছু একটা হবে আর
সারা প্রাণময় ছড়িয়ে পড়বে আলোর আলপনা ।
ওপাশের দুটো পলাশ গাছেই উপচে পড়ছে হাজার ফুলের লাল টুকটুকে খুশি
কিছু একটা হবেই আজ ।
সরু পাহাড়ী রাস্তা বেয়ে নেমে আসছে DTDC’র ডেলিভারি বয়
কি মিষ্টি চেহারা ছেলেটার, মাথায় পশমের টুপি, হাতে হলুদ রঙের খাম
খামের ভিতর একটা রঙধনু ভরা আছে
নাকি হাজার প্রজাপতি ?
আজ কিছু একটা তো হবেই হবে
কিছু একটা হবে, কিছু একটা হবে
জীবন তো এভাবেই ভাবে
যত দুঃখ সব একদিন টুপ টুপ করে ঝ’রে যাবে
শুকনো পাতার মতো । আলো মাখা আলপনা ছোঁবে
কিছু তো একটা হবে !


Saturday, 14 October 2017

কালো সূর্য /কেকা সেন






বিকেলের পসরা সাজানো রাজপথ আর
সিগনালের হিসেব নিকেশ পার করে
ঝাঁকড়া চুলের তলায় জীর্ণ দুটি চোখ
চোখ রাখে সুদৃশ্য কাঁচের দেওয়ালে।
চোখ রাখে,চকোলেট আর ভেনিলার সম্ভারে।
ঠিক তখনি,মুঠোয় দলা পাকানো কাগজ -কারেন্সি চাবুক মারে তার ইচ্ছার দরজায়।
"মিয় আমরে" এর কাঁচে তখন বুকজোড়া গোধূলির মাখামাখি রূপ।
আরও একবার আগামী আকাশের ঠোঁট জুড়ে সূর্যটা কালো হয়ে পুড়ে যায়---
বরাবরের মতো ।

অধিকার/বিশ্বজিৎ মাইতি


বিশ্বাস নেই অলৌকিক আচারে-
আমার অস্তিত্ব উৎসব যা কিছু সবই গোলাঘর ছুঁয়ে।
আমি চাই না আকাশগঙ্গা স্বর্গীয় কল্পনায়-
চাই শুধু ধুলোমাখা রোদ জল শিশিরে
আমার আজন্ম অধিকার।
দুর্বা ঘাসের উপর শুয়ে থাকা ওই যে কাস্তেটা,
ওই আমার ইহকালের সুখ-
সারা উঠোন জুড়ে যত আলপনা সব তোমার থাক।

সুন্দর/সুতপা পূততুন্ড


দিন দিন আমার দুপুরগুলো
হয়ে উঠছে জলজ।
প্রতিদিনের ছায়াপথ, হারাচ্ছে ক্রমশ......
রোজকার নামচা থেকে বাদ
পরে যাচ্ছে সবুজ ধুলো।
তার পাশে পাশেই হাঁটছে
বিকেলের মনখারাপ গুলো.....
এমন সংকটে আমি ভাগ বসাতে চাই,
তোমার অফিস ফেরতা কিছুটা সময়।
সেই ইচ্ছের বীজে একটু একটু করে জল দিই,
তোমার নিকোটিনের সুগন্ধ
পাতো, উত্তাপ বিনিময়ের...
ধুলোর জীবন থেকে কিছুটা
অনিশ্চিত ধুয়ে মুছে যাক।
আমার অধিবাস তোমার
সুন্দরের দিকেই থাক.......


প্রাইভেট টক/ সম্পূর্ণা


বহুক্ষণ চেয়ে বসে আছি। এ কমাস কয়েকশো বার ওপর নীচ করেছি, বাহাত্তরটা সিঁড়ি,ঝকঝকে মুখস্থ। জুতোর তলায় লাগা ধৈর্য্যটা কয়েকবার ছিঁড়ে গেছিল পেরেক লাগিয়ে মেরামত করে নিয়েছি। খুব দৌড়াদৌড়ি করছি, যেখানেই যাচ্ছি পাশের টেবিল দেখিয়ে দিচ্ছে, বা পাঠিয়ে দিচ্ছে ওপর তলায়! আমার মতো আম আদমির জন্য লিফট নয়! অগত্যা...! চৌত্রিশের দাদা থেকে ছসাত বছরের দিদি, আন্দোলন, পরিবর্তন সব একই! দেয়ালের রঙ গুলোয় শুধু বদলের নতুন গন্ধ শুঁকে নেয়া।
বাবার পেনশন নিয়ে ছোটাছুটি। বড়দা আছে বেশ! গর্ভমেন্ট অফিসার, সত্যি অর্থে সোনার টুকরো ছেলে । প্রতি বছর পে-কমিশন আর বোনাসে বদলে যাচ্ছে ওর রোগা গিলগিলে চেহারাটা! তবু অসম্ভব সংযমী পকেট, নেই নেই লেগেই আছে। আর বাড়িতে বেকার ভাই থাকলে তো "আপনার আজকের দিনটি"তে সবসময়ই থাকবে খোঁচা, চিমটি আর হাহুতাশ! এইবার লোকটা তাকিয়েছে! আজ তিনমাস আসছি, এতোদিন পড়তে পারিনি চশমার পেছনে আড়াল করা ইচ্ছেটা। চকচক করছে চোখ,বোধহয় বলতে চাইছে, প্রাইভেট টক আছে!
কাজ শেষ, ফিরছি! ঝিমলিকে একটা ফোন করতে ইচ্ছে করছে। সেই ঝিমলি, যাকে দেখার জন্য রোজ দুপুরে ঠা ঠা রোদে ছাদে দাঁড়িয়ে থেকেছি, বৃষ্টিতে ভিজে চুবচুবে হয়ে ওর কোচিংয়ের পাশের গলিতে অপেক্ষা করেছি! ওর একবার চাউনিতে লুকোনো ইচ্ছে গুলো রোজ একটু করে সেঁকে নিয়েছি! ওই কালভার্টটার সোঁদা সন্ধ্যে গুলোয় ঠোঁটের ওপর ঠোঁট রেখে বারবার বলেছি,'আমি শুধু তোমারই সোনা!' কতোবার বাবার মানিব্যাগ থেকে টাকা নিয়ে ওকে সিনেমা দেখিয়েছি! না, সততার বাতিক ছিল না কোনোদিনই! প্রেমিককে সৎ হলে চলে না, প্রেমিক মানেই ব্র্যান্ডেড মিথ্যেবাদী, অসৎ; সব চলে। ওটায় নরক দর্শন হয় না, শ্রীকৃষ্ণ থেকে জন লিলি একই কথা বলে গেছেন।
সবাই বলত পড়াশোনায় মাথাটা আমার বেশ ভালোই! ঝিমলিও হয়তো তাই ভেবেছিল! কিন্তু বরাবরই আমার গড়পরতা কিছুই ভালোলাগে না। দাদা খুব হিসেব করে চলত। কলেজে থাকতেই ছাত্র-রাজনীতি, ভোট, মিছিল, মিটিং, সাথে রঙবেরঙের স্বপ্ন বুনে দেয়া তরুণ পলিটিসিয়ান! তারপরে আখের গুছিয়ে কাট্টুস! আমার ওসব আসে না! তাই ঝিমলিকেও বোধহয় ঠিকঠাক স্বপ্ন দেখাতে পারিনি। বেকার বাউন্ডুলে প্রেমিকের থেকে, গান্ধীর হাসি ভরা নোট গোনা অফিসার অনেক দামি। প্রেমও হরেদরে সেই ডারউইনের থিওরি, "সার্ভাইবাল অফ দ্য ফিটেস্ট "।এখন তাই ইংলিশ ফন্টে বাংলা ভালোবাসা ভরা মেসেজ গেছে কমে। হাড়হাভাতে ফোনটা তবু অপেক্ষায় থাকে। তবু আজো বুকপকেট ভরতি ঘামে ভেজা প্রাইভেট টক!
ভীষণ ঘুম পাচ্ছে! আজ ফিরেছি দেরিতে। খাবার গুছোনো ছিল টেবিলে, খেয়ে নিয়েছি। একবছর আগে পর্যন্ত মা বসে থাকত। তখনো পর্যন্ত বাড়ির কিছু নির্বিরোধ সমস্যা জানাত। হয়তো আশা ছিল কোথাও আমিও কালেকালে দাদা হয়ে উঠব। মশা ধূপ জ্বলছে, অভ্যস্ত মশা গুলো তাও বার করে নেবে জীবনের নির্যাসটা! কড়া ধোঁয়ায় দেখছি কিছু মুখ, ঝাপসা । ওরা কারা? মা বাবা দাদা ঝিমলির মতো লাগছে! দেখতে আলাদা, কিন্তু সেই চেনা গন্ধ একেক জনের! আমার হাতে অনেক গুলো মুখোশ! ছড়িয়ে পড়ে আছে মায়ের তেলচিটে আঁচলটা, বাবার পেন, দাদার গিটার , ওই তো ঝিমলির সেই বুকের কাছের লাল তিলটা! রোজ সূর্যাস্ত দেখতাম, ওটা কেমন ফ্যাকাসে হয়ে গেছে! সেই পুরনো মিলটা,তেলকলটা ! বিকেলে পাড়ার মোড়ের ক্যারামবোর্ড! চারিদিক নিশ্চুপ! কথাগুলো, শব্দগুলো ফুরিয়ে গেছে! মাথার করিডোর অন্ধকার, মোমবাতিগুলো মিছিলে যাচ্ছে হেঁটে! বুকের কষ্টটা নিঃশ্বাসে চেপে বসছে। উফফ! স্বপ্নটাও বলছে, সব প্রাইভেট টক শেষ, শেষ, শেষ.....!

এক পশলা মুহূর্ত/পার্থসারথি


পাহাড়ী রাস্তার পথে যেতে যেতে আবিষ্কার করলাম
তোর প্রতিটা মনের বাঁকে আমার জন্য জমে থাকা
বিন্দু বিন্দু তিস্তা
গাড়ির ঝাকুনিতে আমার কাঁধ ছুঁয়ে যাওয়া তোর প্রতিটা নিশ্বাস উল্টে যাচ্ছিল
আমার জন্য জমে থাকা তোর
মন খারাপের পৃষ্ঠা
কাঞ্চনজঙ্ঘা আজ বরফের রাজমুকুটে সেজেছে
এত সুন্দর আগে কখনো দেখিনি
আমি জানি তোর চোখ বন্ধ,
এক অদ্ভুত অনুভূতির চাদরে তোর জড়ানো মন আমার কাঁধে শোয়া
আমার বর্ণনা তোর মনে ছবি এঁকে চলেছে
তুলির ঐকান্তিক নিষ্ঠা
পাহাড়ে বৃষ্টি হিসাব কষে হয় না,
আমি জানি আমার কাঁধে এক পশলা বৃষ্টি শুধু সময়ের অপেক্ষা
তোর তিস্তার বুক জুড়ে আজ ছড়িয়ে দিলাম আমার ভালোবাসার নুড়ি
বৃষ্টি শেষের আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে
ইচ্ছেমতো তুই কুড়িয়ে নিস্ তা


Friday, 13 October 2017

চোখ/পরিচয় প্রধান


অন্ধকারে ভেসে ছিল বিবশ আকাশ
শূণ্যে ডুবে ছিল দুই পা ।
প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল যে সত্যে
তার হাতেই ছিল অনুচ্চারিত গুপ্তমন্ত্র
সেই মন্ত্রে জেগে উঠল দুটি পাতা ।
হঠাৎ কেউ খুলে দিল বন্ধ দুয়ার
জ্বলে উঠল সম্মোহিনী আলো !
মঞ্চ জুড়ে শুরু হ’লো অভিনব নাচ
ঘুম রঙে পাথরের স্হির নৃত্য
কি আশ্চর্য্য ! তেরে কেটে ধা !
আকাশের জন্য বোবা নীল আর
সাগর সুনীল বিরহে হোক উথাল পাথাল
সবুজ ঝাউবন কাঁপুক সোনালী বালির ঝড়ে
রাজহাঁস উড়ে যাক সাদা রঙ মেখে ।
গাছে গাছে কত নরম রঙের ফুল !
আমি জানি, ফুল কি জানে সেই কথা ?
তুমি মেলে ধরলে মহামন্ত্র ছটা
যত ঈশ্বর ঈশ্বরী সার বেঁধে দাঁড়লো আলোয় ।
তোমারই কটাক্ষে যাকে
অন্ধকারে ঠেলে দিলে সে ছিল অলক্ষ্যে রসাতল ।

আমি যে অন্ধ হয়ে ব’সে আছি আজীবন
একবার তাকাবে না ?
শোনাবেনা, কোন্ মন্ত্রে সাজালে জীবন ?

মুখ ফোটা/আর্যতীর্থ


শুকনো কিছু করছি জড়ো ভাবনা কুটো
সুযোগ বুঝে মন সেঁকতে আগুন দেবো,
আনাচকানাচ খুঁজছি কথা একটা দুটো
ভাবনা দিয়ে তপ্ত কথার সুবাস নেবো।

কথা এখন দিব্যি বেরোয় ভাবনা ছাড়া
হ্যাঁয়ে হ্যাঁ মিলিয়ে দেওয়াই চলতি প্রথা
ঠেকে ঠেকে শিখে গেছে জিভ বেচারা
মগজটাকে ঘামিওনা যথাতথা।
না বলাটা কঠিন জেনো চিরকালই
হ্যাঁয়ের গায়ে না ঘষলেই লড়াই বাঁধে
আমরা তো চাই দুধেভাতে থাকতে খালি
বিনমগজেই হ্যাঁ বলে দিই সে আহ্লাদে।
তলে তলে সেই সুযোগে ঘুণ ধরেছে
অন্যলোকে বলছে কথা আমার হয়ে
ইচ্ছেমতো বিভাজনের রং চড়েছে
নির্বিবাদে আমিও সেসব যাচ্ছি সয়ে।
'আমরা'এবং 'ওরা' বলে লাইন টানায়
লাভ হয় শুধু তক্কে থাকা দখলদারের
'ওরা'এবং 'আমরা' যখন অস্ত্র শানায়
আলো তখন খোরাকি হয় অন্ধকারের।
কথাগুলোয় এবার দেবো ভাবনা আগুন
চুপ থাকাটা এখন যে কাজ অপরাধের
আমরা ওরায় বিভেদকামী জেনে রাখুন
রামধনুরং সবকটাতেই দেশ আমাদের।

ক্রীড়নক/মতিউল ইসলাম


দরজা খোলা রেখেছি,
হাড়িতে সেদ্ধ হচ্ছে মানবিকতা,
তুমি আসলেই ছিপি খুলে পান করবো
ধর্মীয় সুরা.
রঙিন নেশায় মৌতাতে বাজি ধরবো
প্রিয়ার সারল্য,
কিংবা হোলি খেলতে ও পারি
আত্মজের রক্তে,
দরজা খোলা আছে শুধু তুমি আসলেই
পূর্ণ হয় ষোলকলা.
লালসা কামনা আর যৌনতার মিশ্রনে
তৈরী আছে রাতের খাবার,
হৃদয়ের আলিন্দে পেতেছি বিছানা
নীলয়ে পূর্ণ আছে হাজার গরল.
ঠিক যেমনটি চেয়েছিলে,
ঠিক যেমনটি চাও.
দরজা খোলা আছে
তুমি আসলেই নিঃশব্দে বন্ধ করে দেব
হৃদয়ের সমস্ত আগল.

দান /প্রত্যূষ কর্মকার


নির্জন দুপুরের থেকে তাপ ঝরে গেলে অনায়াসে লেখা যায় নিবিড় রহস্যে মোড়া ঘুম অথবা জন্মের ইতিহাস ফুটে ওঠে পাখির বাসার মত ঘরে,তবুও কখনও কখনও এই
গভীর ঘুমে অচেতন শরীর থেকে উঠে আসে
ভূমিহীন শিশুদের দল,স্বপ্নে ঘুম ভেঙ্গে দেখি
ওদের চোখ দুর্গা আরতির ধোঁয়ায় জ্বালা করে ওঠে,ঠোঁটের কোনে জমে ওঠে শরতের মেঘের মত পেঁজা পেঁজা ফেনা,বাজনার তালে তালে বুক ঢিপঢিপ করে,মাথা তুলে নগ্ন মুখে জিজ্ঞেস করে এই এত আলোর থেকে আমি কতটুকু নিয়েছি আলো?স্বপ্নের ভেতর কেঁপে ওঠে আমার শিরস্ত্রাণ,আমার সাম্রাজ্য,
আমার বুকের খুব ভেতরে শিরশিরে অন্ধকারে থইথই করে ওঠে ঘুমানোর ছল
ওদের পায়ের কাছে জমে ওঠে আমার আরও একটু ঋণ
তারপর ওদেরই বুকের কাছে মাথা নীচু করে খুঁজে নিই ক্ষমা
হে নিরন্ন শিশু,আর কত ঢেলে দিবি অপাত্রে দুর্বহ ক্ষমাশীল দান?

আশ্বিন / শ্যামশ্রী রায় কর্মকার


ভোর ভোর ঘণ্টা বাজে জোড়া গীর্জায়
যেন ঈশ্বর যাবার আগে ডাক দিয়ে যায়
যেন শেষের সেদিন
নীলমাথা পুরনো দোকানে ময়লা স্যাণ্ডো পরা লোক
একমনে কবেকার গ্রামাফোন সারে
বাজায়,আবার খোলে পুরনো ইস্ক্রুপ
অপূর্ব মোহময় সুরে
কে যেন আলোর স্বর বাজায় সেতারে
পাখিরা ডানার ভাঁজে আড় ভাঙে
ছোট ছোট লাফ দেয় উড়বার আগে
আমাদের ছোট ছোট আনমনা পাপ
ধুয়ে যায় জলের ঝাপটে
সমস্ত আশ্বিন জুড়ে আকাশে ছড়িয়ে থাকে দেবতার নীল
সংবৎসরের যত শিহরণ কাশ হয়ে ফুটে থাকে উন্মুক্ত মাঠে।

আলোকিত/ শ্যামশ্রী রায় কর্মকার


পায়ের পাতা গুটিয়ে নিচ্ছে সময়
আমি টের পাচ্ছি
তোমার গভীর স্রোতে
যবে থেকে ছুঁয়েছি আঙুল,
অন্ধকার সরে যাচ্ছে সমস্ত বিপন্নতা থেকে
ছুটে আসছে হরিণ রঙা রোদ।