বীর্য পুরুষ
যজ্ঞের অগ্নি থেকে
বেরিয়ে আসছে যে পবিত্র শব্দের উচ্চারণ
তাকে ধারন করার মতো দীক্ষিত মানব নেই দেখে
যিনি এগিয়ে এলেন তিনি এক বীর্যবান কবি।
এই বিরাট ভুবনের দায়ভার নিয়ে
বেদ ব্রাহ্মণ রূপে জাগ্রত হলেন সমাজে।
অথচ যিনি মহামন্ত্রোচ্চারণে কমণ্ডলু হাতে
প্রলয় ওঙ্কার হয়ে দাঁড়াতে পারতেন
তিনি মৌনব্রতে ব্রহ্মকে তেজ রূপে ধারনে ব্যস্ত।
দধীচির যে হাড়, একদা যে সত্য রচনা করেছিল
সে বজ্র সংকল্পচ্যুত হয়ে
ভেসে যাচ্ছে অনন্তের গভীরে
বহু বীর্যবান হারিয়ে যাচ্ছে ভুল ঠিকানায় ।
অথচ একমাত্র বীর্যবানের বসার কথা ছিল পদ্মবেদীতে
আসন্ন যজ্ঞের পুরোহিত হয়ে ;
সেই সংকল্পের চুল্লিতে এখন আগুন নির্বাপিত।
যার ধীরজ কণ্ঠের মন্ত্রোচ্চারণে সমুদ্র থেকে
সজল শরীরে উঠে আসত মৎস্যগন্ধা ;
অনুত সুখের ভেতর কবিতার বর্ণগুলি
দম্ভের সৌন্দর্য হয়ে ফুটে উঠত দু- একটি তারায় ;
তিনি " জবা কুসুম সংকাশ্যং " - মন্ত্রোচ্চারণের আরম্ভ ছুঁয়ে
শব্দকোষ সাজাচ্ছেন চটুল ইস্তাহারে ;
অবশেষে নতজানু হয়ে
আস্বীকার করলেন সমস্ত দায়ভার ।
আগুন
মায়ায় ছায়া ফেলে
কুসুম
নিও না
কেউ
হাতে
এখানে
চুলের ঢেউয়ে কুসুম ভাসানো মানা
আমাদের কুসুমিত মেয়েরা
বহুকাল
পুষ্পরাগে সাজিয়েছিল দেহ
মুখে লোধ্র রেণু ; হাতে লীলাপদ্ম ;
সেই শৃঙ্গার দেখে সাদা দেবলোকের ছিল অপাবৃত লোভ ।
আমাদের পুরুষেরা কুসুমের আগুনকে
বহুকাল বুক পেতে নিয়েছিল
আগুনের মশালকে হাতে নিয়ে হেমন্তের যুবকেরা
অরণ্যে অরণ্যে জ্বেলেছিল হা-হা দাবানল।
আমাদের মেয়েরা দেবদাসী ছিল না কখনো
আমাদের পুরুষেরা আসলে মর্ত্য দেবদূত।
ওদের নিহিত প্রেম কুসুমকে ঘিরে
ওদের নিহিত
প্রেম আগুনকে ঘিরে
এখানে কুসুম ফোটে না তারপর।
এখানে
আগুন নেই জেনো
আগুনের গোধূলি আলোয় কিছু মায়া জেগে থাকে
ছায়ার মতন চিরন্তন।