Showing posts with label সাহিত্য এখন ১৪৩০. Show all posts
Showing posts with label সাহিত্য এখন ১৪৩০. Show all posts

Wednesday 28 February 2024

নিলয় নন্দী

 



কান্ট্রি রোড





জানি না, ফিরছি কার কাছে?
কার জন্য এই ভর সন্ধেবেলা দু'হাত ছড়িয়ে
পেরিয়ে যাচ্ছি জেব্রা ক্রসিং

তাকে চিনি? চিনতাম?
সে-ও বুঝি নদী আঁকে! শহর ছাড়িয়ে বুড়ো বট
ভবঘুরে গিটারের গায়ে থেমে থাকা ট্রাম
খুচরো পয়সা হারানো বাজার সিসিটিভি চোখ
টুপি খুলে বসে আছি প্রিয়তমা ফ্লেক্স
কেউ এসে দিয়ে যায় গান্ধী রুপি, চেরিফুল
ভুলে যাওয়া বাসরুটে পড়ে থাকে অস্তমিত ছায়া
বিকেল ফিরবে কার কাছে?

যতসব দাড়িকমা, দু একটি বিস্ময়
আমি জানালা খুলে দেখি...
নদী পাখি নারী মিছিলের প্রথম পতাকা
ফার্মহাউসের মোড়ে বসন্তের প্রিল্যুড
না বলা কথোপকথন বা নেহাতই চ্যাটজিপিটি
এসবই অলঙ্কার। ফিরে যাওয়ার বাহানা মাত্র।

"টেক মি হোম, কান্ট্রি রোডস..."

Saturday 24 February 2024

অর্ঘ্য কমল পাত্র

 




সফলতা



প্রত্যেকদিন রাত্রে হাতের শিরা কেটে ফেলি। আর গলগল করে শরীরের রক্ত বেরিয়ে যেতে থাকে। ভাবি, এইবার আত্মহত্যা সফল হবে। কিন্তু পরের সকালে অবশ্যম্ভাবী ঘুম ভাঙেই। এভাবে কিছুদিন যেতে না যেতেই, আমি বুঝতে পারি — মৃত্যু আসলে এক স্বপ্নহীন ঘুম। তাই প্রত্যেক সকালে, এই পুনর্জন্ম পেয়ে, আমার মনে হয়— জন্ম এক সহজলভ্য বস্তু। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী মৃত্যু? অগত্যা প্রত্যেকদিন রাত্রে হাতের শিরা কেটে ফেলি ব্লেড দিয়ে। ভাবি, এইবার, ঠিক এইবার…


Sunday 18 February 2024

শুভঙ্কর দাস

 





সাধারণস্য


ভারাক্রান্ত ঈশ্বর সামান্য কীটের চোখরাঙানিতে
বসতবাটি বিক্রি করে দু'কামরার ফ্ল্যাট পেয়েছেন।
একটা রুমে রেখেছেন মরিচাপড়া যাবতীয় অস্ত্রশস্ত্র। আর একটি রুমে দুটি জানালা, একটা দিয়ে ইশারায় রোজ সূর্য ওঠান আর ডোবান। 
অন্যটির পাশে দাঁড়িয়ে হা-হুতাশ করেন।হাহাকার করেন।কাঁদেন।
তারপর জানালা বন্ধ করে দিয়ে 
শ্বেতপাথরের ওপর ধুলো-পাথর ছড়িয়ে শুয়ে পড়েন। 
চোখের জলে সেইসব ধুলো পাথর গ্রহ-নক্ষত্র হয়ে উঠলে কাপড়-মেলা ছাদে গিয়ে মহাশূন্যে সেসব সেঁটে আসেন।
বড্ড গোলমাল হয়ে যায় আজকাল!
বাজার করতে গিয়ে পয়সা নিতে ভুলে যান।
ফুল তুলতে গিয়ে কয়লার খনিতে গিয়ে পৌঁছান।
রাস্তায় চলতে গিয়ে জুতো ছিঁড়ে যায়,কাঁধের ব্যাগ হতে নিয়তির কাগজপত্র সব রাস্তায় পড়ে যায়!

এইভাবে হেঁটে হেঁটে ফ্ল্যাটে ফিরে আসেন,ঘুমিয়ে পড়েন,তখন ভোররাত... 

শুধু অস্ত্রগুলো জেগে ওঠে,যেভাবে অগ্ন্যুৎপাত...

Friday 16 February 2024

সবর্ণা চট্টোপাধ্যায়

 



লেখারা যখন পাল্টে যায়



প্রতিটা পর্বের পর নতুন অধ্যায়ে 

অভিজ্ঞতা বদলে দেয় ভাষা।

এ কি স্বঘোষিত মৃত্যুঘোষণা? 


ছটফট করে ধূসরতা,

রোদে ভেজা নিরীহ দুপুর 

ছেঁড়া ঘুড়ি হয়ে গেঁথে আছে।

পর্দার ফুটোয় অপেক্ষা চোখ !


বন্ধ দরজায় টোকা পড়ল?

সাতজন্মের ডাক-

মার্চ শেষ হতে চায় না আর,

আশ্চর্য ফুল হয়ে ফোটে নির্বাক সন্ধেরা। 


ভালোবাসা মরে গেলে যুদ্ধ বাধবে যে…

তুমি আছো তাই কৃষ্ণচূড়ায় ছেয়ে আছে পথ,

কত শান্তি চারদিকে,

কবিতা লিখতে লিখতে ঘুমিয়ে পড়েছে যেন কোনও কবি!


 

Thursday 15 February 2024

তিলোত্তমা বসু

 



হলুদ পাতা  


বয়স আমাকে এখানে এনেছে 
অস্ত যাচ্ছি ধীরে খুব ধীরে
পৃথিবীর গলা জড়িয়ে ধরেছি 
নরম আবেগে 

এই যে শুনছি ‘ভজ গোবিন্দম্ ’
সর্বগানন্দের কন্ঠে এবং ডুবে আছি খুব !
শ্লোক-পথ ধরে শঙ্কর বুঝি স্বয়ং প্রকট 
মনের গুহায় , হাতে বরাভয়

প্রেম তার রঙ বদলে দিয়েছে
থৈ থৈ করি দারুণ জোয়ারে 
কি যেন কী মায়া টেনে রাখে 
গাঢ় …

‘নির্বাসনা’ শব্দটিকে এত ভালো লাগে !

মেঘ উড়ে আসে 
ঝিঁঝিঁপোকা ডাকে …

Tuesday 13 February 2024

রূপক চট্টোপাধ্যায়

 

 

 
কালান্তরে 
 


কালান্তরে যাই। 
পিছনে পড়ে থাকে সংসারের ঝুঁকি নিয়ে মধ্যবিত্ত কঙ্কাল। যার নখের হাড়ে এখনও 
রোহিণী নক্ষত্র জ্বালানো নাকছাবি। বর্ণময়!

মাথায় বটের চারা চাগিয়ে তুলেছে প্রাগৈতিহাসিক। 
ফাটলে ফাটলে সরীসৃপ ফণায় বিষ জন্মায়,
হেসে ওঠেন নস্ট্রাদামুস!

দুই হাতের তালুতে ভ্রমের মেঘ,
শ্রেণিবিন্যাস ভুলে যাওয়া আঙুল 
আবার একত্রিত হতে চায়।
নাব্যতার বয়স কই?

জগন্ময়ী হোটেলের বেড়ে ওঠা ভাতেই
তিনটে পথশিশু ঐশ্বরিক। যুদ্ধের শঙ্খধ্বনির অপেক্ষায়। তারাও স্থির হয়ে আছে। কৃপানিধি! 

কালান্তর কোথায়?
এই জন্মদোষে ফেরি করি আত্মবিলাপ শুধুই



Sunday 11 February 2024

দেশিক হাজরার কবিতা

 



জ্ঞানেনং গচ্ছামি 


যদি না পায় সে তোমার দেখা যদি না পায় সে তোমার

স্পর্শ। সূর্য প্রণাম সরে বাগিয়ে কাছা দৌড়াতে থাকে 

এদিক ওদিক একা। চুপিসারে যাও, বসো তারই পাশে 

বলো— কী কথা সাজিয়েছ মনে? এরপরে, ইষৎ মুচকি 

হেসে, তাঁর‌ কাঁধে হাত রেখে অতি কিছুক্ষণ থেমে, বলো 

গিয়েছিলে অন্ধকারে, গন্ধ গলির কোনে? তোমায় পেয়ে 

কলরবে বলিলো ধরো, সে সর্বত্র সব জানে। ভয় পেয়ো 

না ধীর করো মন, এ গলি তাঁর মনের মতো নয় এত 

চঞ্চল। বাহ্বা দাও তুলে ধরো আকাশে, উড়িতে দাও 

তাহাকে বলাকার পিছে পিছে। কানের কাছে চুপিসারে 

বলো তুমি যা জানো আমি তা জানিনেকো। মিটে গেলে 

সব, শীতল বাতাসের মতো শান্ত। ছাদ থেকে নেমে একা 

সে একান্তে আরাম কেদারার কোলে, শিশু ঘুমে মত্ত।

ঠিক এমনই সময় ফিরিয়া আসিতে হয় নিজস্থানে...

Thursday 8 February 2024

অমিতাভ দাশশর্মার কবিতা

 



চলে গেলে! যাও।

দায়ভার তুলে নাও।
তারপর সীমা এসে
কী ভীষণ ভালোবেসে 
জড়িয়ে ধরবে।
আকাশ মরবে।
বাণ্ডাকুয়া নদীগুলো
মনভুলো।
বদলাবে খাত
অকস্মাৎ ।
তোমার সীমানা ঘিরে
কাঁটাঝোপ ফিরে ফিরে
জোনাক জ্বালাবে।
সে আলোর ইশারায়
ভারি জ্বর গায়
আসবে কি, টলেটলে?
পায়ে দলে
সুগন্ধি ঘাস,
যা বারোমাস
ফুটে থাকে।
মাখে
উপেক্ষা দলন।
উচাটন মন
ঘাস ফেলে উড়ে যায়,
পায়,
প্রিয় পরমের গান?
নাকি শুনশান
ঘেরাটোপে
সীমায়িত খোপে
থেকে যাবে বরাবর?
আমার এ ঘর
আজীবন ভর
সাজিয়ে রাখব।
মাখব
স্মৃতি-ধুলো ক্রমাগত
দিন যাবে মত
উড়ে উড়ে
ঘুরে ঘুরে
পরতে পরতে জমে
হৃদয়ের ওমে
হয়ে যাবে প্রস্তর।
আমার সাজানো ঘর
আদরে রাখবে তাকে।
তারপর, কোনো এক ফাঁকে
তুলি ছেড়ে গেছে যাকে

সেই শিল্পীর

স্মৃতি ভিড়
তুলে দেবে তার হাতে
একই সাথে
ছেনি ও হাতুড়ি।
চাঁদবুড়ি
হেসে হেসে
ভালোবেসে
ব'লে দেবে কানে-কানে
"ইজেল-প্যালেট, তুলি ছেড়ে যাওয়া মানে
শিল্পীরা জানে।
ঐ স্মৃতি-পাথরের বুকে
হাতুড়ি ও ছেনি ঠুকে ঠুকে
ভেঙে ফেল আপনার সীমা,
গ'ড়ে তোল পাথর-প্রতিমা"…

Wednesday 7 February 2024

অসীম কুমার চক্রবর্তীর কবিতা

 



সন্তান

মনেমনে দিনেদিনে শক্ত হয়ে যাবে,
ছোট মুঠোয় আগামী দিনের ড্রাইভিং স্কিল,
তবু কেন জানি বড় হয় না!
এখনও মনে হয় মখমলের মতো ,
নরম তুলতুলে ওম দিই শীতের দিনে।
মনে হয় একছুট্টে দুহাতে জড়িয়ে ধরে,
পড়তে পড়তে সামলে নিয়ে একগাল হাসি!
যেন আলোর ঝলকানি,
যেন বাঁধভাঙা কলকলরব,
শতায়ু ভব!