দ্বিরাগমন
Sunday, 3 November 2024
অরিত্র দ্বিবেদী
Friday, 25 October 2024
অমিত চক্রবর্তী
মদালসার জন্যে চম্পূ না লিখে
১
লটারি জেতার সৌভাগ্য ক’বার হয় মানুষের, শুকনো কাঠি ঘষে আগুন মেপেছিল যে নারী, তার সন্ধান আমি তোমাতে পেয়েছি মদালসা, মনস্বিনী তুমি, মাধবী মুখার্জি চলন, তাই আজ আর কোনো চম্পূ নয়, আমার পদ্যভাষা প্রাচীন হয়ে যাচ্ছে, প্রাচীনতম, গ্রামীণ, গ্রামীণতম হয়ে যাচ্ছে, যাবেই, সামান্য বা অসামান্য উষ্ণতায়, না-অতি-শীত, এইভাবে মেঝেতে গড়াব আমরা, আলস্যে আর সোহাগে তন্ময়লাজ, সারাদিন মুখতৃষ্ণা, মুখতৃষ্ণা, সাহস কিংবা ইশারার এন্ডগেম, অনর্থক গুজবে মাতুক গৌড়বঙ্গ, নাস্তানাবুদ হোক পাড়াপড়শির থিয়েটার, পর্দাঢাকা দুপুর থেকে কৌতূহলী সন্ধ্যায় আমরা গলে গলে মিশে যাব, যেন কেউ নই, যেন দুরাশার অন্য পিঠ, সম্পূর্ণ, অসম্পূর্ণ।
২
সুরেলা ভবিষ্যদ্বাণী, বৈধর্ম্য বিরুদ্ধমত, পরিবেষ্টন সুপরিসর। গাঢ় অথচ আলোড়ন তোলা। সে বলেছিল আমার কবিতার একটি মানে বই লিখছে। মানে নিশ্চয় আছে কোনো পতনের, সে ভেবেছিল, নিরাশার সঙ্গে তুমুল তর্ক করতেও রাজি ছিল সেদিন। আমি এখন দূর থেকে দেখি আমাকে, আমার বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম সব দেখি দূর লেন্সে, ছোট সাইজের নিষ্ঠুরতা, ঘোলাটে ফোকাস। পুরোনো রেকর্ডের দিন আজ, গতকাল বন্দনার অনুষ্ঠান। এমনই আচারপালন আমাদের। প্রথমেই অবশ্য বুক ছুঁয়ে বলে রাখা ভালো যে আমি একজন অপেক্ষার সম্রাট, বাদুড় যেমন গুপ্ত কারাকক্ষে, চোরাদরজা একটি ছাদের, অদেখা হয়ে থাকব আজ সারাদিন। শীতের লম্বা, ধারালো বাঘনখ নয়, আজ ভীষ্মদেব, মেদুর বরষা, আজ দৈলিপী চলন, লচক লচক বিজলী ঝলক।
৩
আলো এখানে ভাঙা এখন, রাসিয়ান জিপসি গান যেমন, মনখারাপ আর স্পন্দনের মৈত্রী মেশানো, কখনো পিছিয়ে পড়ে সে, কখনো ক্লান্ত, এ প্রসঙ্গ একবার এসেছিল আমাদের প্রথম দেখায়, অর্কিড এবং আলো কে বেশি নীল হবে আজ, আমরা হয়তো জানতাম সেদিন। সুতরাং সময় কম, রূপোলি হয়ে আসছে বেণীবন্ধ, সে সত্য সঙ্গীত জানে, আমরা সঙ্কল্প নেব আজ, নিজেরা কি আলো হব যখন সবচেয়ে বেশি আতংকিত, যখন রূদ্ধশ্বাস? ঢেলে সাজাব আবার সেই নদীর পাড়, কুড়িয়ে নেব বিগত বা মুছে যাওয়া আলো, মাটি থেকে জল থেকে ঘেঁসে আসা আলো, আলেয়া, প্রতিফলন, যেটুকু অবশিষ্ট আছে তার, তাদের, আমরা পুরো অন্ধকারের আগে তলানি সরটুকু ছেঁচে নেব, সময়ের বাক্স থেকে, নুয়ে পড়া গাছ থেকে। ওই দ্যাখো আবার বৃষ্টি এলো।
Thursday, 17 October 2024
বর্ণময় বাড়ৈ
রাক্ষস
নদী সর্বভুক;
আমারই মতন
সে আমায় খেতে চায় প্রকাশ্যে,
আমি গোপনে–
নদী আমাদের জমি উঠোন পথ গিলতে গিলতে
হাত বাড়ায় ঘরের চালে, সঞ্চয়ের ধানে–
তবু তাকে ভালোবাসি।
যে যন্ত্রণা দেয় তাকেও ভালোবাসা যায় প্রাণের অধিক;
যেন প্রসবযন্ত্রণার আর্তনাদে শিখিয়ে দিয়েছে মা...
শিখিয়ে দিয়েছে,
ভালোবাসার মানুষ রাক্ষস হলেও তাকে ভালোবাসা যায়,
নিজেকেই বেড়ে দেওয়া যায় তাঁর পাতে, অনায়াসে...
Wednesday, 16 October 2024
গৌরব চক্রবর্তী
সুরা ও চুম্বনের কবিতা
শূন্যতা কখনও সাদা হয়তো কখনও গাঢ় নীল
কে তাকে করেছে পান কে তাকে মেখেছে সারা গায়ে?
পূর্ণতার দেহ থেকে একদিন রং খসে যায়
কবিতার ছন্দ থেকে মুছে যায় সব অন্তমিল
সন্দেহ কখনও শ্লথ আবার কখনও দ্রুতগামী
বিষ ও বিষয় নিয়ে ভোগে মত্ত জীবন আমার
মেষলগ্নে ধনুরাশি নক্ষত্র অশ্বিনী শুক্রবার
উপরে ওঠার পর ক্রমশ নিচের দিকে নামি
পশ্চাতে গোধূলি আর শীর্ষে সান্ধ্যকাল এসে থামে
দক্ষিণে শব্দের ঢল, পূর্বে প্রতিশ্রুতি পাহারায়
চতুর্দিকে চতুঃপার্শ্বে কারা শুধু আসে, চলে যায়?
নিজেকে বিস্তৃত লিখে আমি পড়ে থাকি শিরোনামে
শব্দের রাখাল আমি শব্দ নিয়ে চরিয়ে বেড়াই
সশব্দে নীরবটুকু লিখতে লিখতে থেমে যাই
Wednesday, 25 September 2024
অঙ্কুশ পাল
আত্মবিক্রি ভ্যারাইটি স্টোর
ঠিক যেভাবে মাটির ভাঁড়ে
জমিয়ে রাখা খুচরো খুচরো পয়সা গুলো
ভেঙে ফেলে ছড়িয়ে দিই সবার মধ্যে
নিজেকে ঠিক তেমন করে
ছড়িয়ে যাই লোকের হাটে
হয়তো লেখা, হয়তো ছবি, হয়তো গানে
বিক্রি করি নিজেই নিজের নিজস্বকে
আমার গলায় বাজতে থাকে
বেচে ফেলার রাষ্ট্রগীতি
কেউ কিনে নেয়, কেউ চলে যায়
কেউ তাকিয়ে, মুখ ঘুরিয়ে, আসছি পরে
বলে চলে যায়
দিনের শেষে আমার গায়ে লেগে থাকে হাজারটা চোখ
আমিও পণ্য, খুব সামান্য দামেই যেমন বিকিয়ে যাই
গা থেকে চোখ যেই সরে যায়, হারিয়ে যাই অতল ভূঁয়ে
আমি তো চাই সবাই দেখুক বিলবোর্ডের ওই ডিসক্লেমারে
“চোখ যেন ভাই লেগেই থাকে,
চোখ যেন না সরতে পারে”
ফেসবুকের ওই প্রোফাইলটা তো আত্মবিক্রি ভ্যারাইটি স্টোর!
Thursday, 5 September 2024
রাজীব মৌলিক
দুটি কবিতা
নিশীথ ষড়ংগী
Tuesday, 23 April 2024
শ্যামাপ্রসাদ লাহা
ঘাট
ভিজে শাড়ি থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল
গড়িয়ে যায় বাঁধানো ঘাটের মোহনায়-
শ্যাওলার পিচ্ছিলতায় জলতরঙ্গ জাল বোনে।
সদ্য বিবাহিতা মেয়েটি জলে নামে-
তারপর আলতা পরিয়ে দেয় ঢেউয়ের পায়ে।
দুপুরের কড়া রোদে ঝরে পড়ে শুকনো পাতা
টুপটুপ করে; ঝোপ থেকে বেরিয়ে আসে
হাওয়া কোনও এক চরিত্রহীনের ছদ্মবেশে;
আমি ঘাট হয়ে বসে থাকি স্মৃতির অধিকারে
আমার ঘাড়ের উপর পা রেখে চলে যায়-
সদ্য জলে ভেজা বাসর রাত ...............।
Monday, 22 April 2024
আবু হাসান শাহরিয়ার
দীর্ঘশ্বাস
চোখের পাতা বন্ধ রেখে অবাক হয়ে দেখছি তাকে
যে আমাকে
কফিন কফিন শয্যাশায়ী দেখতে পেয়ে ভাবছে কিছু
না হোক প্লেটো, এরিস্টটল, মিশেল ফুকো
ভাবছে যখন, ভানও যদি হয় সে তাদের পরম্পরা
তফাত শুধু কী ভাবছে তা, বলছে না মুখ
যে যা-ই ভাবুক
আমি এখন সবদৃশ্যে দায়মুক্ত ছবির মানুষ—
নিরুদ্দেশের উলটোরথে অন্তবিহীন নৈঃশব্দ্য
চোখ বন্ধ, দুহাত খালি
জোড়াতালির
জীবন ফেলে এখন আমার দূর অজানায় যাত্রাশুরু
কবরখানা অব্দি যারা পৌঁছে দেবে, তাদের ভিড়ে
ভাবুক মহাশয়কে দেখে খরস্রোতা হাসি পাচ্ছে
পেলেই বা কী, মরদেহের হাসতে মানা
যে আমাকে দেখামাত্র মুখ ফেরাত, সে-ও এসেছে
বাদ যায়নি সেই অধমও—
যার কামনার শীর্ষে ছিল আমার মৃত্যু
নিজের চোখে লাশ দেখে তার বিশদ স্বস্তি
শেষযাত্রা এমনই হয়
এক ঝটকায় অদৃশ্য হয় নামপরিচয়
সব দাগ সব পথের রেখা একনিমেষে মুছতে আসে
তা-ও মৃতরা মর্ত্যধামে ফেরত আসে দীর্ঘশ্বাসে
কোথায় কারও একলা মনের দীর্ঘশ্বাসে
একলা মনের দী র্ঘ শ্বা সে
Wednesday, 28 February 2024
নিলয় নন্দী
কান্ট্রি রোড
জানি না, ফিরছি কার কাছে?
কার জন্য এই ভর সন্ধেবেলা দু'হাত ছড়িয়ে
পেরিয়ে যাচ্ছি জেব্রা ক্রসিং
তাকে চিনি? চিনতাম?
সে-ও বুঝি নদী আঁকে! শহর ছাড়িয়ে বুড়ো বট
ভবঘুরে গিটারের গায়ে থেমে থাকা ট্রাম
খুচরো পয়সা হারানো বাজার সিসিটিভি চোখ
টুপি খুলে বসে আছি প্রিয়তমা ফ্লেক্স
কেউ এসে দিয়ে যায় গান্ধী রুপি, চেরিফুল
ভুলে যাওয়া বাসরুটে পড়ে থাকে অস্তমিত ছায়া
বিকেল ফিরবে কার কাছে?
যতসব দাড়িকমা, দু একটি বিস্ময়
আমি জানালা খুলে দেখি...
নদী পাখি নারী মিছিলের প্রথম পতাকা
ফার্মহাউসের মোড়ে বসন্তের প্রিল্যুড
না বলা কথোপকথন বা নেহাতই চ্যাটজিপিটি
এসবই অলঙ্কার। ফিরে যাওয়ার বাহানা মাত্র।
"টেক মি হোম, কান্ট্রি রোডস..."
Saturday, 24 February 2024
অর্ঘ্য কমল পাত্র
সফলতা
প্রত্যেকদিন রাত্রে হাতের শিরা কেটে ফেলি। আর গলগল করে শরীরের রক্ত বেরিয়ে যেতে থাকে। ভাবি, এইবার আত্মহত্যা সফল হবে। কিন্তু পরের সকালে অবশ্যম্ভাবী ঘুম ভাঙেই। এভাবে কিছুদিন যেতে না যেতেই, আমি বুঝতে পারি — মৃত্যু আসলে এক স্বপ্নহীন ঘুম। তাই প্রত্যেক সকালে, এই পুনর্জন্ম পেয়ে, আমার মনে হয়— জন্ম এক সহজলভ্য বস্তু। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী মৃত্যু? অগত্যা প্রত্যেকদিন রাত্রে হাতের শিরা কেটে ফেলি ব্লেড দিয়ে। ভাবি, এইবার, ঠিক এইবার…
Sunday, 18 February 2024
শুভঙ্কর দাস
Friday, 16 February 2024
সবর্ণা চট্টোপাধ্যায়
লেখারা যখন পাল্টে যায়
প্রতিটা পর্বের পর নতুন অধ্যায়ে
অভিজ্ঞতা বদলে দেয় ভাষা।
এ কি স্বঘোষিত মৃত্যুঘোষণা?
ছটফট করে ধূসরতা,
রোদে ভেজা নিরীহ দুপুর
ছেঁড়া ঘুড়ি হয়ে গেঁথে আছে।
পর্দার ফুটোয় অপেক্ষা চোখ !
বন্ধ দরজায় টোকা পড়ল?
সাতজন্মের ডাক-
মার্চ শেষ হতে চায় না আর,
আশ্চর্য ফুল হয়ে ফোটে নির্বাক সন্ধেরা।
ভালোবাসা মরে গেলে যুদ্ধ বাধবে যে…
তুমি আছো তাই কৃষ্ণচূড়ায় ছেয়ে আছে পথ,
কত শান্তি চারদিকে,
কবিতা লিখতে লিখতে ঘুমিয়ে পড়েছে যেন কোনও কবি!
Thursday, 15 February 2024
তিলোত্তমা বসু
হলুদ পাতা
Tuesday, 13 February 2024
রূপক চট্টোপাধ্যায়
Sunday, 11 February 2024
দেশিক হাজরার কবিতা
জ্ঞানেনং গচ্ছামি
Thursday, 8 February 2024
অমিতাভ দাশশর্মার কবিতা
চলে গেলে! যাও।
সেই শিল্পীর
Friday, 2 February 2024
সোমা দত্তের কবিতা
নবজাগরণ
বলেছ অসুর, বলেছ রাক্ষস, বলেছ প্রেত, কালো নিগার–
সেই আঘাতের গর্ত ভরে, হিরণ্ময় আলো জ্বেলে,
হত্যার মন্ত্র গেয়েছ জন্ম থেকে জন্মান্তরে,
এক রং থেকে বর্ণাঢ্য প্রাকৃতিক দৃষ্টিহীনতায়।
ভুলে গেছ নগর সভ্যতার আদিরস তাণ্ডব...!
অন্ধকার চিরে আলো জালিয়েছ আর্যসভ্যতার...!
ধ্বংসের আস্ফালনে স্ফীত রাজা তুমি –
রক্তপথে বিজয়তোরন উড়িয়েছে তোমার মধুযামিনী।
কলিঙ্গফলকে তোমার বিলাপ শুনেছি রেশমের সংলাপে,
চাঁড়াল হৃদয় থেকে সরে গেছে চারণের গান–
তবু ভালবাসা গাছের বুকে চাঁদের আলোর মতন জ'মে,
তবু ভালবাসা ক্ষীণ হাতে মায়ের শরীর ঢেকেছে কাপড়ে,
তবু ভালোবাসা পণ রাখে মুখোশের মুখটিকে দেবে শেয়ালের মুখে–
অতিগূঢ় লাঞ্ছনায় রক্তাক্ত শরীরে, শুরু হবে কৃষিকাজ।
Saturday, 4 November 2023
সৌ র ভ ব র্ধ ন
Thursday, 2 November 2023
অমিতাভ দাশশর্মা
এলোমেলো
মধ্যবর্তী আমাদের
তিরিশটি বছরের
ট্র্যাজেডি, তার
বিপুল ডানার
ঝাপটায়, মরু দ্বার খুলে,
ধুলোঝড় তুলে
ঢেকে দিয়েদিল পথ,
আর--- ছোঁয়ার শপথ।
অনুভব--- শুধু অনুভবে
অরবে
অনর্গল করে চৈতন্যের দ্বার।
তোমার --- আমার
লাবন্যের সংসারে
শিশু ও কিশোরে
ছিল সোনাঝরা
মধুক্ষরা
দিন ও রজনী।
কিন্তু, প্রেমমণি?
খুঁজে ফিরে ফিরে যাকে
বাতুলতা পাকে
জড়িয়েছি নিজেকে নিজেই,
তার নাম গন্ধ নেই
সংসার লাবন্যে।
এ জন অরন্যে
নিজের জন্যে
বাঁচা খুব প্রয়োজন।
তাই ,
তোমাকে পাবার এত
আয়োজন।
বুঝলে না!
ফেলে দিলে!
বিশ্বাস হয় না।
উপেক্ষা গয়না
যত পরাও আমাকে---
বাঁধো পাকে পাকে
প্রেমের বাঁধনে।
জানে
মন , যথাযথ জানে,
প্রেম কাকে বলে, তার মানে।