Wednesday, 14 October 2020

শ‍্যামাচরণ কর্মকার, ছড়া , সাহিত্য এখন শারদ ২০২০,

 


পুজোর বাদ‍্যি

বর্ষা ফুরোলে যেমনটা করে শরৎ এখানে আসে
আকাশ  রাঙায় সোনালি আলোয় আর গুলে দেয় নীল
যেমনটা করে পেঁজা-তুলো মেঘ পাল তুলে ওড়ে, ভাসে
তেমন করেই শরৎ এসেছে, আছেও তেমন মিল।

বাগান ভরেছে শিউলি-টগরে, শিশির মেখেছে ঘাস
পদ্মকুঁড়ির ঘুমও ভেঙেছে, শালুক দিচ্ছে উঁকি
হিমেল বাতাসে তেমন করেই দুলছে দোদুল কাশ
জানালার ধারে চুপচাপ বসে দেখছে এসব খুকি।

দেখছে কিন্তু আনন্দ নেই অন‍্যবারের মতো
শরৎ এলে সে ঘুম ভুলে যেত পুজোর গন্ধ পেয়ে
ঠাকুরদালানে দুগ্গা সাজত দেখে কী মজাই হত
রঙ করা হয়, চোখ আঁকা হয় দেখত সে চেয়ে চেয়ে।

শরৎ এসেছে প্রকৃতি সেজেছে সাজছে না তবু খুকু
দুগ্গা গড়ার বরাত পায়নি তার জ‍্যেঠু-বাবা-কাকা
ঘরেতে অভাব কষ্টে চলছে খুশি নেই এতটুকু
দালানে কত না দুগ্গা থাকত এবার তা নেই, ফাঁকা।

পুজোর গন্ধ পায় না সে খুঁজে তবু মহালয়া এলো
আগমনী- গান বাজছে তবুও দিচ্ছে না মনে নাড়া
পাড়ায় পাড়ায় মহামারী আজ সব তাই এলোমেলো
দুগ্গাপুজোও হবে না এ-গাঁয়ে আতঙ্কে দিশেহারা!

শরৎ এলেই ঘুম ভুলে যেত মন হত উড়ুউড়ু
পুজোমণ্ডপে ঘুরত- ফিরত বন্ধুরা দলবেঁধে
পুজোয় এবার ক'টা জামা হবে গোনা হয়ে যেত শুরু-
জানালায় বসে ভাবছে এসব আর সে যাচ্ছে কেঁদে!

শরৎ এসেছে, পুজোও আসবে হবে না নতুন জামা
যদি পুজো হয় পুরোনো জামায় দেখতে হবে যে ঠাকুর
বাবার হাতেও কাজটাজ নেই, কাজ হারিয়েছে মামা
পুজোর বাদ‍্যি দুঃখের সুরে বাজবে তাকুড় নাকুড়!
                       ................

No comments:

Post a Comment