Tuesday, 6 October 2020

প্রসঙ্গঃ বিদ্যাসাগর, কানাইলাল জানা , সাহিত্য এখন শারদ ২০২০,

 


প্রসঙ্গঃ বিদ্যাসাগর

 

তাঁর জন্মের দুশ বছর পর,জন্ম মাসের শেষ দিনে কিছু কথা।  বিখ্যাত ব্যক্তিদের নিয়ে মিথ থাকবেই। দুটির কথা বলব , সঙ্গে আরো কিছু প্রসঙ্গ। 

(১) যখন আমি ছাত্র, কলকাতা সহ ভিন্ জেলার মানুষজনকে বহুবার বলতে শুনেছিঃ
লেখাপড়ায় তো ভাল হবেই কারণ  তোমরা যে বিদ্যাসাগরের জেলার লোক। ' বিস্মিত হয়েছি কিন্তু উত্তর দিইনি। 1828 সালে আট বছর বয়সে ঈশ্বর চন্দ্র যখন কলিকাতা পাড়ি দেন তখন বীরসিংহ গ্রাম তথা ঘাটাল হুগলি জেলায়। 1872 সালের জুন মাসে ঘাটাল ও চন্দ্রকোণা থানা যখন মেদিনীপুর জেলার অন্তর্ভূক্ত হয় ,বর্ণপরিচয় প্রকাশ ও অন্যান্য যুগান্তকারী সংষ্কার ততদিনে বিদ্যাসাগর সেরে ফেলেছেন যার সুফল যে কোনো বাঙালি পেতে পারে। আমাদের জেলা পূর্ব মেদিনীপুর যে শিক্ষার শীর্ষে আছে্‌ , মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল বেরোলে বোঝা যায়।তার কারণ  এই জেলার ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান। শিল্প নেই,  যেটুকু আছে হলদিয়ায়, তার সুযোগ সুবিধা এই জেলার মানুষ পেয়েছে অতি অল্প। বরং এই জেলার ছেলেমেয়েদের দুবেলা পড়তে বসার অভ্যেস আছে, তার ওপর আছে শিক্ষক ও অভিভাবকদের দায় দায়িত্ব যা এখন হয়ে গেছে পরম্পরা। ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী এই  জেলায় বিরাজ করে এক শান্ত পরিবেশ ( স্বাধীনতা সংগ্রামের  কাল বাদে) যা লেখা পড়ার ক্ষেত্রে  খুবই উপযোগী। 

(২) বিদ্যাসাগরের দামোদর নদ সাঁতরে পার হওয়াঃ
দামোদর নদ কিন্তু যে কোনো নদীর থেকে আলাদা। বয়স্ক অজগর যখন একটি ছাগল গিলে  হজম হতে না হতে আবার একটি  বাছুর গিলে ফেললে যেমন সরু মোটা হয় তার দেহ, তেমনি দামোদর সারা পথ সরু প্রশস্ত সরু প্রশস্ত আবার সরু আবার প্রশস্ত এভাবে তার দেহ সৌষ্ঠব। 
 ফোর্ট উইলিয়াম অধ্যক্ষ জন মার্শালের কাছে ছুটি মঞ্জুর হতে দুপুর। ভাইয়ের বিয়ে উপলক্ষে কেনা ধুতিশাড়ি কিছু টাকা পয়সা ও দ্রব্য সামগ্রী মিলে ব্যাগটি নেহাত খুব ছোটো নয়, কানা দামোদর পার হয়ে যখন চাঁপা ডাঙায় হাজির হন ঘোর বর্ষায় উত্তাল দামোদরে নৌকো চলাচল বন্ধ। এখানে নদী বেশ সরু বলে স্রোত বেশি। পদাতিক ঈশ্বর চন্দ্র দক্ষ সাঁতারু কিন্তু ব্যাগপত্র নিয়ে ভয়াল নদ পার হওয়া অসম্ভব। আরামবাগ হয়ে বাড়ি পৌঁছোতে মাঝরাত। সম্ভবত মাতৃভক্তির মহিমা প্রচার করতে বিদ্যাসাগর জীবনীকার চন্ডীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ঈশ্বর পুত্র নারায়ণ চন্দ্রের কথা শুনে লিখেছেন। তাঁর থেকে অনেকে। 
এই দুটো বিষয় বাদ দিলে কিসে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও মুগ্ধতা, ঋণ? একে একে বলি দুই পর্বে। 
(ক)  মনীষীদের মধ্যে বিদ্যাসাগরই একমাত্র প্রান্তিক মানুষ কলকাতায় এসে প্রথমে বড়বাজারে রাইমণির স্নেহ পরে জানবাজারের রাসমণির আজীবন (মৃত্যু 1861)  সাহচর্য পেয়েছিলেন, যা তিনি কোনোদিন  ভোলেননি। এদিকে সৎসঙ্গ না পেয়ে পুত্র নারায়ণ চন্দ্রের কী হাল হল? বীরসিংহ গ্রামে  ঠাকুরদার লাগামহীন শাসনে থেকে বেয়াড়া বন্ধুদের সঙ্গে   মিশে জীবনকে এমনই বিপদজনক  করে তুললেন যে ছেলেকে ত্যাজ্যপুত্র করে ছাড়লেন বিদ্যাসাগর। সম্পত্তির ভাগ পর্যন্ত দেন নি। নিজের কাছে রাখলে তা একেবারেই হত না: (২) ঈশ্বর চন্দ্র যে হিন্দু কলেজে ভর্তি হতে পারেননি ( তাঁর বাবার মাসিক আয় যেখানে ১০ টাকা,হিন্দু কলেজের মাসিক বেতন ৫ টাকা) সেটা হয়তো আমাদের জন্য সৌভাগ্য কারণ ডিরোজিয়ান হালচাল সামলে বিদ্যাসাগরের এতোটা মৌলিক থাকাটা ছিল বেশ কঠিন। 
(৩) বোধোদয় -এ তাঁর ঈশ্বর ভাবনাঃ বিশ্বব্রহ্মান্ডের সব বস্তুই পদার্্‌  যা তিন রকম -চেতন, অচেতন -উদ্ভিদ। ঈশ্বরের জন্ম চেতনায়,তাঁকে কেউ দেখতে   পায় না। অসাধারণ এই বিশ্লেষণ অন্তত আমার কাছে। 
(৪)ছাপাখানা  স্থাপনঃ বটতলার কুরুচিপূর্ণ বইর ঠেক ছিল  চিনাবাজারে।কিন্তু বিদ্যাসাগর বুঝলেন ,কলেজ  স্ট্রিটই হবে আগামী দিনের প্রকৃত বইবাজার। বন্ধু মদনমোহন তর্কালঙ্কার কে সঙ্গে নিয়ে কলেজ স্ট্রিটে খুললেন ছাপাখানা সংস্কৃত প্রেস ডিপোজিটর  সেই ১৮৪৭ সালেই। 

(৫) তেলা মাথায় তেল না দেওয়ার প্রকৃষ্ট উদাহরণঃ ১৮৬৬ সালে  নিজের গ্রামে দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে অন্নসত্র খোলার পর দেখা গেল যারা  খেতে বসেছে তাদের মধ্যে অনেক দুঃখী মেয়ের মাথার 
চুল উস্কো খুস্ক্‌ তেল নেই বলে। 
তিনি মাথায় মাখার তেল দিলেন। ছোঁয়াচ এড়িয়ে তেল দেওয়া হচ্ছে  দেখে নিজেই কারু কারু মাথায় মাখিয়ে দিলেন। 
(৬) যুক্তি যুদ্ধের সেরা সৈনিকঃ দেশে দেশে মুক্তি যুদ্ধ হয় কিন্তু বিদ্যাসাগরের শক্তি ক্ষয় হয়েছে অনবরত যুক্তি- যুদ্ধে যুক্ত থেকে। শুধু তো রাধাকান্ত দেব ও তাঁর দলবল নয়, বংকিমচন্দ্র -ঈশ্বর  
গুপ্ত- হরপ্রসাদ  শাস্ত্রী-ভূদেব মুখোপাধ্যায় -রমেশ চন্দ্র দত্ত- কৃষ্ণ কমল ভট্টাচার্য এবং কে নন ,যিনি বিদ্যাসগরকে আক্রমন করেন নি? 

 
 
এবার শেষ পর্ব। 
 

(১) মহাত্মা গান্ধীর জীবনে বিদ্যাসাগরের প্রভাবঃ
বিশ বছরের বেশি ( ১৮৯৩-১৯১৫) দক্ষিণ   আফ্রিকায় কাটিয়েছেন মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। শেষ দুবছর প্রবাসী ভারতীয়দের অধিকার অর্জনে সত্যাগ্রহ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে তার সমাপ্তি ঘটে যখন শ্বেতাঙ্গ সরকার   ঘোষণা করল ইন্ডিয়ান রিলিফ আইন- ১৮১৪। 
১৯১৫ সালে দেশে ফেরার পথে জাহাজে বসে কতকিছু ভেবেও ঠিক করতে পারলেননা পরবর্তী কর্মসূচি। বোম্বাইতে নেমেই ছুটলেন গুরু গোপাল কৃষ্ণ গোখলের কাছে। (গোপাল কৃষ্ণ মহামতি ,তাই বলে তিনি কখনোই বলেননিঃ What Bengal thinks to-day India thinks to-morrow.  তিনি বলেছিলেনঃ What educated Indians think to-day, the rest of Indians to-morrow.  ব্যারিস্টার মনমোহন ঘোষ আন্দাজ করলেন বাঙালিদের মতো শিক্ষিত আর কারা? তিনিই প্রচার শুরু করে দিলেন ,যেটা সব বাঙালি বলে তৃপ্তি পান আজও। 
গুরু শিষ্যকে তাতিয়ে দেওয়ার জন্য বললেনঃ মোহন তুমি বিয়ে করলে বড্ড কম বয়সে (১৩) । তাও স্ত্রী তোমার থেকে বড়ো, আইন ব্যবসায় ব্যর্থ, হাতের অক্ষরও বেশ খারাপ। শারীরিক ভাবেও দুর্বল। এদিকে দেখ বাল গঙ্গাধর তিলক, লালা রাজপত রাই, ,সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জিরা এগিয়ে রয়েছেন কতো বিপুল বিক্রম ও তেজ নিয়ে। এঁদের ওপরে যদি যেতে চাও তবে নতুন  কিছু পথ উদ্ভাবন করতে হবে নিজেকেই। ঐ বছরই মৃত্যু হয় গুরুর । 
নাটাল  প্রদেশ ও অন্যত্র যে করমচাঁদ গান্ধী কোট প্যান্ট পরতেন, মনে পড়ে গেল ১০ বছর আগে তাঁর বাংলার বিদ্যাসাগরের ওপর লেখা প্রবন্ধের কথা,   যেখানে তিনি সোৎসাহে উল্লেখ করেছেন  খাদির ধুতি চাদর পায়ে চটি মাথায় টিকি বিদ্যাসাগরের সরল জীবন যাপনের কথা।  পেয়ে গেলেন তিনি আগামী দিনে কী পোষাক হবে তার পরিষ্কার আভাষ।
: (২) তিনি ছিলেন এক আশ্চর্য রকমের পদাতিকঃ 
তখনো তৈরি হয়নি ৬নং জাতীয় সড়ক। বীরসিংহ গ্রাম থেকে ঘাটাল ও আরামবাগ হয়ে হেঁটে কলকাতায় যাতায়াত তাঁর কাছে ছিল এক অনায়াসসাধ্য ব্যাপার। কলকাতা থেকে অম্বিকাকালনা,যাদবপুর, হাওড়া ২৪ পরগণা এবং আরো কতো জায়গায় হেঁটেই যেতেন অধ্যাপকের খোঁজে ও অন্য কাজে। মা ভগবতী দেবী কাশীতে মারা গেলে ( ১৮৭১) উপস্থিত থাকতে পারেননি,   তাই পরবর্তী এক বছর খালি পায়ে হেঁটে হেঁটেই সারা কলিকাতা   কাজকর্ম সারতেন। 
(৩) তাঁর হিন্দি শেখাঃ 
এতো ব্যস্ততার মাঝেও হিন্দি শিক্ষক রেখে হিন্দি ভাষা জানা ও আয়ত্ব করাও এক মূল্যবান বিষয় ।  না হলে কিন্তু এভাবে হিন্দি থেকে অনুবাদ করা যায় না 'বেতাল পঞ্চবিংশতি।  যদিও রেভারেন্ড কৃষ্ণমেোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাপে  আবার কিছু সংশোধন করার পর তা পাঠ্য পুস্তকের মর্যাদা পায়। 
(৪) অপরিমেয় তাঁর সহ্যশক্তিঃ
বিধবাবিবাহ প্রচলনে খুশি হয়ে শান্তিপুরের তাঁতিরা শাড়ি বুনলেনঃ'বেঁচে থাকো বিদ্যাসাগর চিরজীবী হয়ে '। তখন কলিকাতার  কবিকুল পাল্টা দিলেনঃ 'শুয়ে থাক্ বিদ্যাসাগর চিররুগি হয়ে। ' বিদ্যাসাগর কিন্তু কাউকেই আক্রমণ করেননি শুধু চেয়ে চেয়ে  দেখলেন। 
(৫) তাঁর ব্যর্থতা ও আক্ষেপঃ
বহুবিবাহ ও গৌরীদান (বাল্যবিবাহ) রদ করতে কতো পরিকল্পনা ও শ্রম উজাড় করে দিয়েছেন কিন্তু  আইন যে তিনি চালু করতে পারেননি তার জন্য শুধু বিরোধীরা দায়ী নন । সিপাহি বিদ্রোহের পর ইংল্যান্ডের রানি নিজ হাতে শাসন ব্যবস্থা নিয়ে নিলে কোম্পানির লোকজন কর্তাব্যক্তিরা নিজেদের চাকরি বাঁচাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। এদেশের আচার বিচার নিয়ে আর ভাবিত নন। এ দুঃখ বিদ্যাসাগরের থেকেই গেল আমৃত্যু। 
(৬) শেষ জীবন কর্মাটাঁড়ে বসবাসঃ
বর্ণপরিচয় প্রকাশ যদি বাঙালি জাতির জন্য তাঁর শ্রেষ্ঠ নির্মাণ হয় তবে কর্মাটাঁড়ে শেষ জীবন যাপনের সিদ্ধান্ত ছিল তাঁর সঠিক ও মৌলিক নির্বাচন। এখন দেখে নেওয়া যাক্ কেন মৌলিক। 
গ্রামে তিনি শেষ ১৯ বছর যাননি, সম্পত্তি ও প্রেস নিয়ে ভাইদের সঙ্গে কোর্ট কাচারি, ছেলেকে ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণা, মার ওপর অভিমান । যখন স্ত্রী দীনময়ী  স্লেট খড়ি নিয়ে বসলেন শিক্ষারম্ভ করবেন বলে, ভগবতী দেবী বেঁকে বসলেনঃ 'তাহলে সংসারে আমি একাই শুধু খেটে মরি '।  স্ত্রী দীনময়ী-র সঙ্গেও দূরত্ব রচনা হল যখন ত্যাজ্যপুত্র নারায়ণ চন্দ্র নিজেই মত দিলেন যে বিধবাবিবাহে তিনি রাজি। বিধবাবিবাহ চালু নিয়ে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গেও বিরোধ। ভাই শম্ভুচন্দ্রের মেয়ের বিয়েতে হঠাৎ পাত্রের বাবা বেঁকে বসলেনঃ 'এই বিয়েতে সম্মতি নেই কারণ আপনার দাদাতো বিধবাদের বিয়ে দেন।' শম্ভুচন্দ্র বিয়ে সারলেন মিথ্যে বলে যে ' দাদার সঙ্গে সম্পর্ক নেই। '
কলিকাতায় এলিট-সমাজ তো তির ছুড়েই চলেছেন। এমনকি মাইকেল মধূসূদনের ব্যবহারেও আহত হলেন। মাইকেল মধুসূদন ফ্রান্স থেকে ফিরে যাতে ভালোভাবে থাকতে পারেন , তার জন্য তিন তলা বাড়ি ভাড়া করেন। ঠিক ভাবে যাতে ব্যারিস্টারি করতে পারেন তার ব্যবস্থা করতে দশ হাজার টাকা ধার করেন।  বিদ্যাসাগর একবার  খামের ওপর  বাবু মধুসূদন দত্ত লিখে তাঁকে চিঠি পাঠান। । এই অপরাধে মধুসূদন চিঠি ফেরত পাঠালেন প্রেরকের হাতে। 
৬০ টি বিধবাবিবাহ দিতে ধার হল আশি হাজার টাকার বেশি। বর সেজে বিদ্যাসাগরের কাছ থেকে  টাকাপয়সা হাতিয়ে কতজন যে কতভাবে হেনস্তা করলো বিবাহিত  বিধবাদের! তাতে খুবই মর্মাহত ও বিপর্যস্ত  হলেন তিনি। উপলব্ধি, করলেন  গ্রামে কিংবা কলকাতায়  নিজের বলে কেউ পাশে নেই। 
এমন অবস্তায় শেষ দুদশক তিনি সাঁওতাল পরগণার কর্মাটাঁড়ে জমি ও বাড়ি কিনে 'নন্দনকানন 'এ বেশ ছিলেন। আমার ব্রহ্মপুরের বাড়ির পেছনে ইট ভাটার মালিক কিছু সাঁওতাল এনেছিলেন এক সময়। এখনো বয়স্ক সাঁওতালদের সরলতা দেখে  অবাক হই, তাহলে দেড়শ বছর আগে সাঁওতাল পরগণার সাঁওতাল ও অন্যান্য জনজাতি যে সরল জীবন যাপন করতো তা ধ্রুব সত্য। বিদ্যাসাগর তাদের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করে, কলেরার চিকিৎসা ও সেবা শুশ্রূষা করে বাঁচিয়ে, নিজ হাতে গড়া আম বাগানের আম ও নানা ফল খাইয়ে ও বিতরণ করে দেহ মনে স্নেহের হাত বুলিয়ে তিনি যে তাদের নিজের লোক হয়ে বাঁচলেন তা ভাবতেও ভালো লাগে।

No comments:

Post a Comment