সাহস
সবার সব ক্ষমতা থাকে না। কিন্তু তাই বলে ইচ্ছাও জাগবে না তেমন তো নয় । অনুপমের মনেও ইচ্ছাটা বাসা বেঁধেছে বেশ কিছুদিন শুধু অনুপমই ইচ্ছার গোড়ায় সার জল কিছু দেয়নি। কে আর খাল কেটে কুমীর আনতে চায় যেচে ! প্রথম প্রথম কিন্তু শুভ্রা মানে অনুপমের এক এবং অদ্বিতীয় বউ বেশ রসেবশেই দাম্পত্যালাপ চালাত । বিয়ে যত পুরানো হচ্ছে রস তো নয় আস্ত কর্পূরের ড্যালা উবে যাচ্ছে তো যাচ্ছেই। শুভ্রার এখন কথায় কথায় খোঁটা । অনুপমের নাসিকা গর্জনের ঠ্যালাই পাড়াতে নাকি চোরের উপদ্রব কমে গেছে , অনুপম প্লেটে ঢেলে বিশ্রী শব্দে চা খায় ( আগে তো এটাই শুভ্রার জারা হট্ কে টাইপ লাগত ) , বাজারের যত কানা বেগুন পাকা ঢ্যাঁড়স নরম পেটের মাছেরা অনুপমের থলিতেই ঝাঁপিয়ে এসে পড়ে ! নেহাতই শুভ্রার হাতের ক্যারিশ্মা রান্নাগুলো এত সুস্বাদু হয় । অভিযোগের তালিকা শ্রাদ্ধের ফর্দের চেয়েও লম্বা ।
যদিও বচনবাগীশ হিসাবে অনুপমের নামডাক আছে কিন্তু যাবতীয় পুরুষ- সিংহের মতো অনুপমেরও বউয়ের কাছে সব বোলচাল পুরো ঘেঁটে- ঘ । কিন্তু সহ্যেরও একটা সীমা নিদেনপক্ষে একটা এক্সপায়ারি ডেট থাকে তাই শেষ অবধি শান্তি চুক্তি ভেঙে অনুপম একদিন বোমাটা ফাটিয়েই ফেলল। স্লগ ওভারে সপাটে ছক্কা হাঁকিয়ে বলে দিল ঘুমের সময় শুভ্রার মুখ বোয়াল মাছের মতো হাঁ হয়ে থাকে , আগে ছিল আটাশ ইঞ্চির তন্বী কোমর এখন ছেচল্লিশের কুমড়োপটাশ , গলার স্বর শুনলে রাস্তার কুকুর অবধি ঝগড়া থামিয়ে দেয় আর রান্নার কথা না তোলাই ভালো জেলখানার চেয়েও খারাপ অনুপমের মতো ঋষিতুল্য মানুষ বলেই সেসব গলধঃকরণ করে । অনুপম বেশ আত্মপ্রসাদের সঙ্গে ভাবল জব্বর একখানা চাল দিয়েছি , একেবারে কিস্তিমাৎ ! যাক এবারে আয়েশ করে সিগারেটে একটা টান দেওয়া যাক । যেই অনুপম লাইটার জ্বালাতে গ্যাছে ওমনি আঙুলে এক মোক্ষম ছ্যাঁকা , দূর থেকে ভেসে আসছে অমোঘ বচন ‘ আর কখন ঘুম থেকে উঠবে কুম্ভকর্ণের বংশধর ? বলি এরপর কি দোকান বাজারের ঝাঁপ গুটাতে যাবে !” ধড়মড় করে উঠে অনুপম দেখে , কখন যে চায়ের কাপ রেখে গেছিল শুভ্রা ঘুমন্ত অবস্থায় সে ঐ গরম চায়েই আঙুল ডুবিয়েছে
No comments:
Post a Comment