Showing posts with label সাহিত্য এখন ২০২৪. Show all posts
Showing posts with label সাহিত্য এখন ২০২৪. Show all posts

Sunday, 3 November 2024

অরিত্র দ্বিবেদী

 দ্বিরাগমন


পথের কথা পথই ফেরায়
পথ কি তোমায় চালায় এমন
এ স্বপ্নবৎ অল্পে হেঁটে
ওদিক ফিরে এদিক ঘেঁষে
ঘষটে কেমন আসতেছিলে 
এই কি তোমার চাঁদেরবাড়ি
গুহারলিপি রাজকন্যে? এমন বাড়িই 
চাইতে নাকি?

সকাল হলেই উড়তে যাবে
পথের কথা পথই মেটায়
ক্ষুণ্ণমনে; অলুক্ষণে এ স্বপ্নবৎ
ঘোরাও কেন, রাজকন্যে?

এই বুঝি কি মনের কথা
এই কি তোমার প্রেম বিলোনো 
হন্যে হয়ে?


Friday, 25 October 2024

অমিত চক্রবর্তী

 মদালসার জন্যে চম্পূ না লিখে


লটারি জেতার সৌভাগ্য ক’বার হয় মানুষের, শুকনো কাঠি ঘষে আগুন মেপেছিল যে নারী, তার সন্ধান আমি তোমাতে পেয়েছি মদালসা, মনস্বিনী তুমি, মাধবী মুখার্জি চলন, তাই আজ আর কোনো চম্পূ নয়, আমার পদ্যভাষা প্রাচীন হয়ে যাচ্ছে, প্রাচীনতম, গ্রামীণ, গ্রামীণতম হয়ে যাচ্ছে, যাবেই, সামান্য বা অসামান্য উষ্ণতায়, না-অতি-শীত, এইভাবে মেঝেতে গড়াব আমরা, আলস্যে আর সোহাগে তন্ময়লাজ, সারাদিন মুখতৃষ্ণা, মুখতৃষ্ণা, সাহস কিংবা ইশারার এন্ডগেম, অনর্থক গুজবে মাতুক গৌড়বঙ্গ, নাস্তানাবুদ হোক পাড়াপড়শির থিয়েটার, পর্দাঢাকা দুপুর থেকে কৌতূহলী সন্ধ্যায় আমরা গলে গলে মিশে যাব, যেন কেউ নই, যেন দুরাশার অন্য পিঠ, সম্পূর্ণ, অসম্পূর্ণ।  

 

সুরেলা ভবিষ্যদ্বাণী, বৈধর্ম্য বিরুদ্ধমত, পরিবেষ্টন সুপরিসর। গাঢ় অথচ আলোড়ন তোলা। সে বলেছিল আমার কবিতার একটি মানে বই লিখছে। মানে নিশ্চয় আছে কোনো পতনের, সে ভেবেছিল, নিরাশার সঙ্গে তুমুল তর্ক করতেও রাজি ছিল সেদিন। আমি এখন দূর থেকে দেখি আমাকে, আমার বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম সব দেখি দূর লেন্সে, ছোট সাইজের নিষ্ঠুরতা, ঘোলাটে ফোকাস। পুরোনো রেকর্ডের দিন আজ, গতকাল বন্দনার অনুষ্ঠান। এমনই আচারপালন আমাদের। প্রথমেই অবশ্য বুক ছুঁয়ে বলে রাখা ভালো যে আমি একজন অপেক্ষার সম্রাট, বাদুড় যেমন গুপ্ত কারাকক্ষে, চোরাদরজা একটি ছাদের, অদেখা হয়ে থাকব আজ সারাদিন। শীতের লম্বা, ধারালো বাঘনখ নয়, আজ ভীষ্মদেব, মেদুর বরষা, আজ দৈলিপী চলন, লচক লচক বিজলী ঝলক।

 

আলো এখানে ভাঙা এখন, রাসিয়ান জিপসি গান যেমন, মনখারাপ আর স্পন্দনের মৈত্রী মেশানো, কখনো পিছিয়ে পড়ে সে, কখনো ক্লান্ত, এ প্রসঙ্গ একবার এসেছিল আমাদের প্রথম দেখায়, অর্কিড এবং আলো কে বেশি নীল হবে আজ, আমরা হয়তো জানতাম সেদিন। সুতরাং সময় কম, রূপোলি হয়ে আসছে বেণীবন্ধ, সে সত্য সঙ্গীত জানে, আমরা সঙ্কল্প নেব আজ, নিজেরা কি আলো হব যখন সবচেয়ে বেশি আতংকিত, যখন রূদ্ধশ্বাস? ঢেলে সাজাব আবার সেই নদীর পাড়, কুড়িয়ে নেব বিগত বা মুছে যাওয়া আলো, মাটি থেকে জল থেকে ঘেঁসে আসা আলো, আলেয়া, প্রতিফলন, যেটুকু অবশিষ্ট আছে তার, তাদের, আমরা পুরো অন্ধকারের আগে তলানি সরটুকু ছেঁচে নেব, সময়ের বাক্স থেকে, নুয়ে পড়া গাছ থেকে। ওই দ্যাখো আবার বৃষ্টি এলো।

 

Thursday, 17 October 2024

বর্ণময় বাড়ৈ



রাক্ষস 

 

নদী সর্বভুক;

আমার মতন

 

সে আমায় খেতে চায় প্রকাশ্যে,

আমি গোপনে

নদী আমাদের জমি উঠোন পথ গিলতে গিলতে

হাত বাড়ায় ঘরের চালেসঞ্চয়ের ধানে

 

তবু তাকে ভালোবাসি

যে যন্ত্রণা দেয় তাকেও ভালোবাসা যায় প্রাণের অধিক;

যেন প্রসবযন্ত্রণার আর্তনাদে শিখিয়ে দিয়েছে মা...

 

শিখিয়ে দিয়েছে,

ভালোবাসার মানুষ রাক্ষস হলেও তাকে ভালোবাসা যায়,

নিজেকেই বেড়ে দেওয়া যায় তাঁর পাতেঅনায়াসে...

 

Wednesday, 16 October 2024

গৌরব চক্রবর্তী

 


সুরা ও চুম্বনের কবিতা 



শূন্যতা কখনও সাদা হয়তো কখনও গাঢ় নীল

কে তাকে করেছে পান কে তাকে মেখেছে সারা গায়ে?

পূর্ণতার দেহ থেকে একদিন রং খসে যায়

কবিতার ছন্দ থেকে মুছে যায় সব অন্তমিল 


সন্দেহ কখনও শ্লথ আবার কখনও দ্রুতগামী 

বিষ ও বিষয় নিয়ে ভোগে মত্ত জীবন আমার

মেষলগ্নে ধনুরাশি নক্ষত্র অশ্বিনী শুক্রবার 

উপরে ওঠার পর ক্রমশ নিচের দিকে নামি


পশ্চাতে গোধূলি আর শীর্ষে সান্ধ্যকাল এসে থামে

দক্ষিণে শব্দের ঢল, পূর্বে প্রতিশ্রুতি পাহারায় 

চতুর্দিকে চতুঃপার্শ্বে কারা শুধু আসে, চলে যায়?

নিজেকে বিস্তৃত লিখে আমি পড়ে থাকি শিরোনামে


শব্দের রাখাল আমি শব্দ নিয়ে চরিয়ে বেড়াই

সশব্দে নীরবটুকু লিখতে লিখতে থেমে যাই

Wednesday, 25 September 2024

অঙ্কুশ পাল

 

 


 

আত্মবিক্রি ভ্যারাইটি স্টোর



ঠিক যেভাবে মাটির ভাঁড়ে

জমিয়ে রাখা খুচরো খুচরো পয়সা গুলো

ভেঙে ফেলে ছড়িয়ে দিই সবার মধ্যে

নিজেকে ঠিক তেমন করে 

ছড়িয়ে যাই লোকের হাটে 

হয়তো লেখা, হয়তো ছবি, হয়তো গানে

বিক্রি করি নিজেই নিজের নিজস্বকে


আমার গলায় বাজতে থাকে

বেচে ফেলার রাষ্ট্রগীতি

কেউ কিনে নেয়, কেউ চলে যায়

কেউ তাকিয়ে, মুখ ঘুরিয়ে, আসছি পরে

বলে চলে যায়


দিনের শেষে আমার গায়ে লেগে থাকে হাজারটা চোখ 

আমিও পণ্য, খুব সামান্য দামেই যেমন বিকিয়ে যাই

গা থেকে চোখ যেই সরে যায়, হারিয়ে যাই অতল ভূঁয়ে


আমি তো চাই সবাই দেখুক বিলবোর্ডের ওই ডিসক্লেমারে

“চোখ যেন ভাই লেগেই থাকে,

চোখ যেন না সরতে পারে”


ফেসবুকের ওই প্রোফাইলটা তো আত্মবিক্রি ভ্যারাইটি স্টোর!



Thursday, 5 September 2024

রাজীব মৌলিক

 


দুটি কবিতা 


স্পর্শ 



আর একটু কাছে গেলে যদি ছোঁয়া যায় বৃষ্টিফুল
মেঘ মেয়ের জোছনা ধোঁয়া ছাতিম বুক
কালো চোখের মণির লজ্জাবতী শোক
কাছে যেতে চাই 

ছুঁতে চাই দক্ষিণা হাওয়ায়
ভেসে যাওয়া হলদে পাখির
স্নানঘরের সাবান, গন্ধ মাখা চুল
বেদনার বীজ থেকে যে-সব বিশুদ্ধ রক্তজবা
গঙ্গা ফড়িংয়ের মতো মিশে যাচ্ছে জলে
তার সহজ বেদনা ভেঙে ভেঙে দেখি

আর একটু কাছে গেলে যদি ছোঁয়া যায়
পবিত্র তটিনী, স্রোতে ভরা দোঁহা,রাগ

কাছে যেতে চাই ; দেহ মানুষের গন্ধ বোঝে আর
ফুল বোঝে প্রজাপতি মুখ
 
 
 
 পোষ্য



মানুষ শখ করে টিয়াপাখি পোষে
কেউ কুকুর পোষে 
বিড়াল পোষে
বাঘ সিংহ হায়েনা কি-না পোষে

অদ্ভুত লাগলেও তারা মালিকের কথা বোঝে
সহজেই পোষ মেনে যায়
মালিকের বিশ্বস্ত শিষ্য হয়ে ওঠে

অথচ আমি এ-সবের কিছু পুষিনি
আজীবন নিজেকে পোষ্য করতে চেয়েছি

আর নিজেকে পোষ্য করতে গিয়ে দেখি
আমার মতো অবাধ্য দ্বিতীয় কিছু নেই




নিশীথ ষড়ংগী


 



স্তব


গোপনীয়তার শাখা প্রতিদিন ভরে‌ ওঠে রোমাঞ্চ পল্লবে
শিরোধার্য অন্ধকারে ত্বক থেকে ত্বকে কতো  শেড ও
শেফালি 
সম্ভাবনাময়....

আত্মকৌতুক নয়,স্মিত প্রুফ, দেখতে দেখতে 
ঘন্টা মিনিট পার হয়
এক জীবন কতোটা দীর্ঘ আর বলো!
ঝিম ধরা কাচের লন্ঠন --

জমাট দোতলা, সিঁড়ি, ঘুরে ঘুরে উঠেছে ওপরে 
সংহত খিলান,ধাপ,প্রশ্রয় রক্ষা করা অনুযোগহীন
চিলেকোঠা

নীরবতা যোগ্য হয়ে ওঠে রাত্রিদিন....

Tuesday, 23 April 2024

শ্যামাপ্রসাদ লাহা

 


ঘাট



ভিজে শাড়ি থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল

গড়িয়ে যায় বাঁধানো ঘাটের মোহনায়-

শ্যাওলার পিচ্ছিলতায় জলতরঙ্গ জাল বোনে।

সদ্য বিবাহিতা মেয়েটি  জলে নামে-

তারপর আলতা পরিয়ে দেয় ঢেউয়ের পায়ে।

দুপুরের কড়া রোদে ঝরে পড়ে শুকনো পাতা

টুপটুপ করে; ঝোপ থেকে বেরিয়ে আসে

হাওয়া কোনও এক চরিত্রহীনের ছদ্মবেশে;

আমি ঘাট হয়ে বসে থাকি স্মৃতির অধিকারে

আমার ঘাড়ের উপর পা রেখে চলে যায়-

সদ্য জলে ভেজা বাসর রাত ...............।





Monday, 22 April 2024

আবু হাসান শাহরিয়ার

 


দীর্ঘশ্বাস



চোখের পাতা বন্ধ রেখে অবাক হয়ে দেখছি তাকে


যে আমাকে

কফিন কফিন শয্যাশায়ী দেখতে পেয়ে ভাবছে কিছু

না হোক প্লেটো, এরিস্টটল, মিশেল ফুকো

ভাবছে যখন, ভানও যদি হয় সে তাদের পরম্পরা

তফাত শুধু কী ভাবছে তা, বলছে না মুখ


যে যা-ই ভাবুক 

আমি এখন সবদৃশ্যে দায়মুক্ত ছবির মানুষ—

নিরুদ্দেশের উলটোরথে অন্তবিহীন নৈঃশব্দ্য

চোখ বন্ধ, দুহাত খালি


জোড়াতালির

জীবন ফেলে এখন আমার দূর অজানায় যাত্রাশুরু

কবরখানা অব্দি যারা পৌঁছে দেবে, তাদের ভিড়ে

ভাবুক মহাশয়কে দেখে খরস্রোতা হাসি পাচ্ছে

পেলেই বা কী, মরদেহের হাসতে মানা

যে আমাকে দেখামাত্র মুখ ফেরাত, সে-ও এসেছে

বাদ যায়নি সেই অধমও—

যার কামনার শীর্ষে ছিল আমার মৃত্যু

নিজের চোখে লাশ দেখে তার বিশদ স্বস্তি

শেষযাত্রা এমনই হয়


এক ঝটকায় অদৃশ্য হয় নামপরিচয়

সব দাগ সব পথের রেখা একনিমেষে মুছতে আসে

তা-ও মৃতরা মর্ত্যধামে ফেরত আসে দীর্ঘশ্বাসে

কোথায় কারও একলা মনের দীর্ঘশ্বাসে

একলা মনের দী  র্ঘ  শ্বা  সে


Wednesday, 28 February 2024

নিলয় নন্দী

 



কান্ট্রি রোড





জানি না, ফিরছি কার কাছে?
কার জন্য এই ভর সন্ধেবেলা দু'হাত ছড়িয়ে
পেরিয়ে যাচ্ছি জেব্রা ক্রসিং

তাকে চিনি? চিনতাম?
সে-ও বুঝি নদী আঁকে! শহর ছাড়িয়ে বুড়ো বট
ভবঘুরে গিটারের গায়ে থেমে থাকা ট্রাম
খুচরো পয়সা হারানো বাজার সিসিটিভি চোখ
টুপি খুলে বসে আছি প্রিয়তমা ফ্লেক্স
কেউ এসে দিয়ে যায় গান্ধী রুপি, চেরিফুল
ভুলে যাওয়া বাসরুটে পড়ে থাকে অস্তমিত ছায়া
বিকেল ফিরবে কার কাছে?

যতসব দাড়িকমা, দু একটি বিস্ময়
আমি জানালা খুলে দেখি...
নদী পাখি নারী মিছিলের প্রথম পতাকা
ফার্মহাউসের মোড়ে বসন্তের প্রিল্যুড
না বলা কথোপকথন বা নেহাতই চ্যাটজিপিটি
এসবই অলঙ্কার। ফিরে যাওয়ার বাহানা মাত্র।

"টেক মি হোম, কান্ট্রি রোডস..."

Saturday, 24 February 2024

অর্ঘ্য কমল পাত্র

 




সফলতা



প্রত্যেকদিন রাত্রে হাতের শিরা কেটে ফেলি। আর গলগল করে শরীরের রক্ত বেরিয়ে যেতে থাকে। ভাবি, এইবার আত্মহত্যা সফল হবে। কিন্তু পরের সকালে অবশ্যম্ভাবী ঘুম ভাঙেই। এভাবে কিছুদিন যেতে না যেতেই, আমি বুঝতে পারি — মৃত্যু আসলে এক স্বপ্নহীন ঘুম। তাই প্রত্যেক সকালে, এই পুনর্জন্ম পেয়ে, আমার মনে হয়— জন্ম এক সহজলভ্য বস্তু। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী মৃত্যু? অগত্যা প্রত্যেকদিন রাত্রে হাতের শিরা কেটে ফেলি ব্লেড দিয়ে। ভাবি, এইবার, ঠিক এইবার…


Sunday, 18 February 2024

শুভঙ্কর দাস

 





সাধারণস্য


ভারাক্রান্ত ঈশ্বর সামান্য কীটের চোখরাঙানিতে
বসতবাটি বিক্রি করে দু'কামরার ফ্ল্যাট পেয়েছেন।
একটা রুমে রেখেছেন মরিচাপড়া যাবতীয় অস্ত্রশস্ত্র। আর একটি রুমে দুটি জানালা, একটা দিয়ে ইশারায় রোজ সূর্য ওঠান আর ডোবান। 
অন্যটির পাশে দাঁড়িয়ে হা-হুতাশ করেন।হাহাকার করেন।কাঁদেন।
তারপর জানালা বন্ধ করে দিয়ে 
শ্বেতপাথরের ওপর ধুলো-পাথর ছড়িয়ে শুয়ে পড়েন। 
চোখের জলে সেইসব ধুলো পাথর গ্রহ-নক্ষত্র হয়ে উঠলে কাপড়-মেলা ছাদে গিয়ে মহাশূন্যে সেসব সেঁটে আসেন।
বড্ড গোলমাল হয়ে যায় আজকাল!
বাজার করতে গিয়ে পয়সা নিতে ভুলে যান।
ফুল তুলতে গিয়ে কয়লার খনিতে গিয়ে পৌঁছান।
রাস্তায় চলতে গিয়ে জুতো ছিঁড়ে যায়,কাঁধের ব্যাগ হতে নিয়তির কাগজপত্র সব রাস্তায় পড়ে যায়!

এইভাবে হেঁটে হেঁটে ফ্ল্যাটে ফিরে আসেন,ঘুমিয়ে পড়েন,তখন ভোররাত... 

শুধু অস্ত্রগুলো জেগে ওঠে,যেভাবে অগ্ন্যুৎপাত...

Friday, 16 February 2024

সবর্ণা চট্টোপাধ্যায়

 



লেখারা যখন পাল্টে যায়



প্রতিটা পর্বের পর নতুন অধ্যায়ে 

অভিজ্ঞতা বদলে দেয় ভাষা।

এ কি স্বঘোষিত মৃত্যুঘোষণা? 


ছটফট করে ধূসরতা,

রোদে ভেজা নিরীহ দুপুর 

ছেঁড়া ঘুড়ি হয়ে গেঁথে আছে।

পর্দার ফুটোয় অপেক্ষা চোখ !


বন্ধ দরজায় টোকা পড়ল?

সাতজন্মের ডাক-

মার্চ শেষ হতে চায় না আর,

আশ্চর্য ফুল হয়ে ফোটে নির্বাক সন্ধেরা। 


ভালোবাসা মরে গেলে যুদ্ধ বাধবে যে…

তুমি আছো তাই কৃষ্ণচূড়ায় ছেয়ে আছে পথ,

কত শান্তি চারদিকে,

কবিতা লিখতে লিখতে ঘুমিয়ে পড়েছে যেন কোনও কবি!


 

Thursday, 15 February 2024

তিলোত্তমা বসু

 



হলুদ পাতা  


বয়স আমাকে এখানে এনেছে 
অস্ত যাচ্ছি ধীরে খুব ধীরে
পৃথিবীর গলা জড়িয়ে ধরেছি 
নরম আবেগে 

এই যে শুনছি ‘ভজ গোবিন্দম্ ’
সর্বগানন্দের কন্ঠে এবং ডুবে আছি খুব !
শ্লোক-পথ ধরে শঙ্কর বুঝি স্বয়ং প্রকট 
মনের গুহায় , হাতে বরাভয়

প্রেম তার রঙ বদলে দিয়েছে
থৈ থৈ করি দারুণ জোয়ারে 
কি যেন কী মায়া টেনে রাখে 
গাঢ় …

‘নির্বাসনা’ শব্দটিকে এত ভালো লাগে !

মেঘ উড়ে আসে 
ঝিঁঝিঁপোকা ডাকে …

Tuesday, 13 February 2024

রূপক চট্টোপাধ্যায়

 

 

 
কালান্তরে 
 


কালান্তরে যাই। 
পিছনে পড়ে থাকে সংসারের ঝুঁকি নিয়ে মধ্যবিত্ত কঙ্কাল। যার নখের হাড়ে এখনও 
রোহিণী নক্ষত্র জ্বালানো নাকছাবি। বর্ণময়!

মাথায় বটের চারা চাগিয়ে তুলেছে প্রাগৈতিহাসিক। 
ফাটলে ফাটলে সরীসৃপ ফণায় বিষ জন্মায়,
হেসে ওঠেন নস্ট্রাদামুস!

দুই হাতের তালুতে ভ্রমের মেঘ,
শ্রেণিবিন্যাস ভুলে যাওয়া আঙুল 
আবার একত্রিত হতে চায়।
নাব্যতার বয়স কই?

জগন্ময়ী হোটেলের বেড়ে ওঠা ভাতেই
তিনটে পথশিশু ঐশ্বরিক। যুদ্ধের শঙ্খধ্বনির অপেক্ষায়। তারাও স্থির হয়ে আছে। কৃপানিধি! 

কালান্তর কোথায়?
এই জন্মদোষে ফেরি করি আত্মবিলাপ শুধুই



Sunday, 11 February 2024

দেশিক হাজরার কবিতা

 



জ্ঞানেনং গচ্ছামি 


যদি না পায় সে তোমার দেখা যদি না পায় সে তোমার

স্পর্শ। সূর্য প্রণাম সরে বাগিয়ে কাছা দৌড়াতে থাকে 

এদিক ওদিক একা। চুপিসারে যাও, বসো তারই পাশে 

বলো— কী কথা সাজিয়েছ মনে? এরপরে, ইষৎ মুচকি 

হেসে, তাঁর‌ কাঁধে হাত রেখে অতি কিছুক্ষণ থেমে, বলো 

গিয়েছিলে অন্ধকারে, গন্ধ গলির কোনে? তোমায় পেয়ে 

কলরবে বলিলো ধরো, সে সর্বত্র সব জানে। ভয় পেয়ো 

না ধীর করো মন, এ গলি তাঁর মনের মতো নয় এত 

চঞ্চল। বাহ্বা দাও তুলে ধরো আকাশে, উড়িতে দাও 

তাহাকে বলাকার পিছে পিছে। কানের কাছে চুপিসারে 

বলো তুমি যা জানো আমি তা জানিনেকো। মিটে গেলে 

সব, শীতল বাতাসের মতো শান্ত। ছাদ থেকে নেমে একা 

সে একান্তে আরাম কেদারার কোলে, শিশু ঘুমে মত্ত।

ঠিক এমনই সময় ফিরিয়া আসিতে হয় নিজস্থানে...

Thursday, 8 February 2024

অমিতাভ দাশশর্মার কবিতা

 



চলে গেলে! যাও।

দায়ভার তুলে নাও।
তারপর সীমা এসে
কী ভীষণ ভালোবেসে 
জড়িয়ে ধরবে।
আকাশ মরবে।
বাণ্ডাকুয়া নদীগুলো
মনভুলো।
বদলাবে খাত
অকস্মাৎ ।
তোমার সীমানা ঘিরে
কাঁটাঝোপ ফিরে ফিরে
জোনাক জ্বালাবে।
সে আলোর ইশারায়
ভারি জ্বর গায়
আসবে কি, টলেটলে?
পায়ে দলে
সুগন্ধি ঘাস,
যা বারোমাস
ফুটে থাকে।
মাখে
উপেক্ষা দলন।
উচাটন মন
ঘাস ফেলে উড়ে যায়,
পায়,
প্রিয় পরমের গান?
নাকি শুনশান
ঘেরাটোপে
সীমায়িত খোপে
থেকে যাবে বরাবর?
আমার এ ঘর
আজীবন ভর
সাজিয়ে রাখব।
মাখব
স্মৃতি-ধুলো ক্রমাগত
দিন যাবে মত
উড়ে উড়ে
ঘুরে ঘুরে
পরতে পরতে জমে
হৃদয়ের ওমে
হয়ে যাবে প্রস্তর।
আমার সাজানো ঘর
আদরে রাখবে তাকে।
তারপর, কোনো এক ফাঁকে
তুলি ছেড়ে গেছে যাকে

সেই শিল্পীর

স্মৃতি ভিড়
তুলে দেবে তার হাতে
একই সাথে
ছেনি ও হাতুড়ি।
চাঁদবুড়ি
হেসে হেসে
ভালোবেসে
ব'লে দেবে কানে-কানে
"ইজেল-প্যালেট, তুলি ছেড়ে যাওয়া মানে
শিল্পীরা জানে।
ঐ স্মৃতি-পাথরের বুকে
হাতুড়ি ও ছেনি ঠুকে ঠুকে
ভেঙে ফেল আপনার সীমা,
গ'ড়ে তোল পাথর-প্রতিমা"…

Wednesday, 7 February 2024

অসীম কুমার চক্রবর্তীর কবিতা

 



সন্তান

মনেমনে দিনেদিনে শক্ত হয়ে যাবে,
ছোট মুঠোয় আগামী দিনের ড্রাইভিং স্কিল,
তবু কেন জানি বড় হয় না!
এখনও মনে হয় মখমলের মতো ,
নরম তুলতুলে ওম দিই শীতের দিনে।
মনে হয় একছুট্টে দুহাতে জড়িয়ে ধরে,
পড়তে পড়তে সামলে নিয়ে একগাল হাসি!
যেন আলোর ঝলকানি,
যেন বাঁধভাঙা কলকলরব,
শতায়ু ভব!