Sunday, 5 November 2017

সাহিত্য এখন, নভেম্বর প্রথম পক্ষ


সম্পাদকীয়

এখন কার্তিক মাস। হাওয়ায় হিমেল গন্ধ ভেসে আসছে। গ্রামবাংলার ভরন্ত বুকে  ধানগাছের সারি আমার আপনার ঘরের সন্তানের মতই মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে কৈশোরের ঔৎসুক্যে আর কোমল দৃপ্ততায়। মানুষের মনে নতুন সাধ, নতুন আশা ভরসা। 'সাহিত্য এখন' পাক্ষিক অনলাইন পত্রিকা হিসাবে পা বাড়াবে, এমন একটা আশা সুপ্ত হয়ে ছিল অনেক দিন ধরেই। আজ তাই সে পথে পা বাড়ালাম। ভরসা রাখি আপনাদের পাশে পাব। আমাদের এই পত্রিকা নতুন ধানের মতই উজ্জ্বল আশ্বাস নিয়ে আসুক, এটুকুই প্রার্থনা।


দুটি অনু গল্প
গোপেশ দে

পরিবর্তন
বিরাটের ভেতরে বেশ কিছুদিন ধরে একটা আমূল পরিবর্তন লক্ষ্য করছে ওর বন্ধুরা।বাড়িতে সারাদিন একা একা বসে থাকে ও।দুচারটে গান শোনে তাও আবার রবীন্দ্রসঙ্গীত।অথচ এই সেদিনও হিন্দি ডিজে গানে গা ভাসিয়ে দিতো।এই পরিবর্তন বাড়ির লোককেও কিছুটা চমকে দিয়েছে।গৌরব প্রায়ই ওর বাড়িতে আসে।বিকেলে বেরুতে বলে।ক্লাবে ক্যারাম খেলার জন্য আসতে বলে,রাতে মদের জলসা।কোনো কিছুকেই পাত্তা দিচ্ছেনা ও।অথচ এই সেদিনও ও বন্ধুদের সাথে হৈ হুল্লোর,রকে বসে মেয়ে দেখলে শিটি, রাতে ভদকা,রামে মাতোয়ারা,উৎসর বাইকে করে অনেকদূরে চরুইভাতি করেছে।বন্ধুদের কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে।শুধু একটি কাজ ও খুব মন দিয়ে করছে।ওদের পাড়ার দীপ্তিকে ফেসবুকে সকালে গুড মর্নিং রাতে গুড নাইট এসব দিতে ভুলে না ও।ওর ভেতরে এতোটা পরিবর্তনের কারণ অবশ্য আছে।দীপ্তিকে ও যেদিন প্রপোজ করে মেয়েটা এক রাশ ঘৃণা এনে বলে,লজ্জা করেনা আমাকে প্রপোজ করতে।নিজে কতটা খারাপ একবার ভেবে দেখেছো?চায়ের দোকানে বসে মেয়ে দেখলে বাজে আচরণ,শিটি,রাতভর মদ গেলো।আবার আমার পেছনে এখন লেগেছো?এই কথাগুলোর পর ও দীপ্তিকে আর সামনা সামনি বিশেষ কিছু বলার সাহস পায়নি।সেদিন থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওসব ছেড়ে দেবে।দীপ্তিকে যে সত্যিকারের ভালোবাসে ও।শুধু ফেসবুকে রোজই একটা কথাই বলে,আমি ওসব খারাপ অভ্যেস ছেড়ে দিয়েছি।আমাকে আর ওসব করতে কখনই দেখবেনা তুমি।সারাদিন বাড়িতেই বসে থাকি।শুধু তোমার ভালোবাসার জন্যই আমি সব কিছু ছাড়তে রাজি আছি।একটিবার বলো ভালোবাসি।এসব ন্যাকা কথায় দীপ্তির মন কিছুতেই গলে না।সে বলে দিয়েছে,কুকুরের লেজ কখনই সোজা হয়না।এভাবেই দিন চলল।কিন্তু একদিন বিকেলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে কিছু দূর আসতেই দেখতে পেল দীপ্তি ঠিক ওর সামনে দিয়েই অয়নদার বাইকের পেছনে বসে কোথায় যেন যাচ্ছে।ওর সব কিছু এলোমেলো হয়ে গেলো।অয়নদা!দীপ্তি কি অয়নদার ব্যাপারখানা জানেনা।আসলে বিরাট অয়নদাকে দুমাস আগে অন্য একটি মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে দেখেছে।একদিন না বেশ কিছুদিন।সেও মদ,সিগারেট সবই খায়।আর মেয়ে দেখলে জিভ লকলক করে।কিন্তু দীপ্তি এটা কী করল।রাতে দীপ্তিকে ফেসবুকে অয়নদার প্রসঙ্গটা বলতেই দীপ্তি লিখে দেয়,অয়ন আমার বয়ফ্রেন্ড।তুমি আর আমায় ডিস্টার্ব করবেনা।বিরাট ফেসবুক থেকে বেরিয়ে এসে নিজের মনেই বলে,এই তাহলে সমাজ!কিছুক্ষণ পর ও গৌরবকে ফোন করে বলে,ভদকার পাঁইট রেডি কর।আজ সারারাত আড্ডা হবে,ডিজে হবে।বলেই ফোনটা কেটে দিল আর বিড়বিড় করে বলল,কুকুরের লেজ সত্যিই সোজা হয়না!

এক্কাদোক্কা
সায়নীর ছোট্ট সংসার।একমাত্র ছেলে বয়স ১০ ক্লাস ফাইভে পড়ে।বর মাল্টিন্যাশনাল জব করে।ওদের বাড়িটি অনেক বনেদিআনা।চারপাশেই ঘর আর মাঝখানে একটা উঠোন সাথে তুলসীমঞ্চ।ওর জা ভাসুর সবাই একই বাড়িতে থাকে।ওর বর নীলাদ্রি চার ভাই।নীলাদ্রি সবার ছোটো।বাকি তিনজনের মেঝজন বিহারে একটা ব্যবসা করে।বাকি দুই দাদা এই বাড়িতেই থাকে।তবে সবাই আলাদাভাবে থাকে।একান্নবর্তী ব্যপারটা নেই।নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি।ভরদুপুরে প্রায় সময়ই একা একা বসে টিভি সিরিয়াল দেখে সায়নী।ছেলে স্কুলে,ছেলের বাবা অফিসে।আজ হঠাৎ দুপুরে লোডশেডিং হওয়ায় ঘরের পেছনের জানলাটা খুলে বসল ও।শীতের দিন।পেছনের জানলা দিয়ে হালকা রোদ এসে পড়ছে।বেশ ভালোই লাগছে।হঠাৎ চোখ গেল দূরের একটা বাড়ির ছাদে।একটা বাচ্চা মেয়ে ছাদের ওপর  কি যেন খেলছে।সায়নী একবার চোখ ফেলেই বুঝে নিল খেলাটা এক্কাদোক্কা।হঠাৎ ওর ভেতর সোনালী স্মৃতি চকচক করে উঠল যেন চোখের সামনে এইচডি পর্দা।সে ও তারসাথে আরো তিন চারটে মেয়ে রাস্তার পাশে দাগ টেনে খেলা শুরু করল।গ্রামের সহজ সাদামাটা রাস্তা।মাটির ওপর আয়তকার দাগ টেনে তারপর ঘরের ভেতরে আড়াআড়িভাবে সরল রেখা টেনে ছয়টি খোপ করে ভাঙা কলসীর চাড়া নিয়ে সেই ছোটোবেলার খেলা।অনেক দিন পর সায়নী নস্টালজিক হয়ে গেল।সত্যি কী আনন্দের দিনই না গেছে ওদের!এখন সবাই যার যার সংসার নিয়ে ব্যস্ত।এক্কাদোক্কা খেলা কোনো গ্রামের বাড়ি কি রাস্তায় আর দেখা মেলেনা।সায়নী এখনও একনজরে বাচ্চা মেয়েটির খেলা দেখছে।

অনুগল্প 
অতনু টিকাইৎ


রাজনীতি 

'এতো তাড়াতাড়ি হারামির বাচ্চাগুলো মুখ ফিরিয়ে নেবে ভাবা যায়!' --- বলেই পার্টি অফিসে ঢোকে স্থানীয় যুব নেতা বিপ্লব দাস। স্থানীয় MLA এর ডাকে আজ আলোচনা সভা বসেছে পার্টি অফিসে। সামনেই বিধানসভা ভোট। কিভাবে এই ভোটে জয়লাভ করা যায় তাই এই আলোচনা সভার প্রধান বিষয়। আলোচনায় উপস্থিত MLA সহ স্থানীয় প্রথম সারির কয়েকজন দাপুটে নেতা।
বিপ্লব দাসের এমন উক্তির কারন বর্তমানে স্থানীয় মানুষদের আচার ব‍্যবহার যাতে স্পষ্ট হয় বেশিরভাগ মানুষজন তাদের পার্টি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এই পাঁচ বছরের মধ‍্যেই অথচ একটা সময় এই মানুষরাই একত্রিত হয়ে তাদের পার্টিকে বিপুল ভোটে জিতিয়েছিল, পার্টির নেতাদের তাদের হৃদয়ে জায়গা দিয়েছিল।
মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার কারন অবশ‍্য  স্বয়ং MLA থেকে স্থানীয় নেতা কারুরই অজানা নয়।
যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের পার্টি ক্ষমতায় এসেছিল, যেমন স্থানীয় পাকা রাস্তা, পর্যাপ্ত পানীয় জল, বেকার সমস‍্যা দুরীকরন এর মতো অনেকগুলি স্থানীয় সমস‍্যা তার কোনটারই সুফল পায়নি জনগন।
রাস্তাটা যদিওবা করা হয়েছিল কিন্তু কয়েকমাস এর মধ‍্যেই তা নষ্ট হয়ে যায়, জলের সমস‍্যার কোন সমাধান হয়নি এবং স্থানীয় বেকার যুবকদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। রাগটা আরও চরমে উঠেছে যখন দেখেছে নেতা ঘনিষ্ট যোগ‍্যতা না থাকা ব‍্যক্তিদের চাকরি হয়েছে।
'কিচ্ছু চিন্তা করবেন না দাদা, আমরা আছি তো। কাজ আগের পার্টি'ই বা কি করেছিল তবু তো তারা এতোগুলো বছর ছিল ক্ষমতায়, নেতা মানে কি ভগবান নাকি যে মানুষ যা চাইবে তাই করে দিতে পারবো আমরা, আর এসব মানুষ বোঝে। কিচ্ছু চিন্তা করবেননা। আমরাই আছি, আমরাই থাকবো।' --- এই বলে MLA এর চিন্তা কমানোর চেষ্টা করেন স্থানীয় দাপুটে নেতা অরিন্দম চ‍্যাটার্জ্জী।
পাশের আরেক নেতা এই শুনে বলে ওঠে --- 'দুই পরিস্থিতি এক নয় অরিন্দমদা। ওই পার্টিতে কালু মস্তানরা ছিল, আমাদের পার্টিতে আছে এমন কেউ যারা ভোটের আগের রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের ধমক দিয়ে আসবে, ভোট লুটবে? আর ভোট না লুট করে মানুষের ভরসায় ভোট হলে আগের পার্টিও ওতোদিন থাকতোনা আর আমরাও থাকবোনা।
বিশ্বাস করুন বা না করুন বাসুদেবদাদা, এটাই fact।'
কালিপদ দাস ওরফে কালু মস্তান। আগের পার্টির শেষ অস্ত্র ছিল এই কালু। কিন্তু আগেরবার বিধানসভা ভোটে সাধারন মানুষ বর্তমান MLA বাসুদেববাবুর নেতৃত্বে একজোট হয়ে স্থানীয় নেতা ও কালুর বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষনা করে। এরজন‍্য বাসুদেববাবুকে কম কাঠ্-খড় পোড়াতে হয়নি। দিনের পর দিন মানুষের মধ‍্যে থেকেছেন, অসুবিধায় পাশে দাঁড়িয়েছেন, মানুষকে বুঝিয়েছেন ঘুরে দাড়ালেই সুদিন নিশ্চিত, আস্থা দিয়েছেন যেমন পাশে রয়েছেন কিন্তু ক্ষমতা না থাকায় চেয়েও করতে পারছেননা অনেক কিছুই, ক্ষমতা পেলেই সেসব কাজ করে দেবেন চুটকি মেরে। মানুষও সেইসময়কার পার্টির নেতাদের এবং সাথে কালু মস্তানদের নানান দুষ্কৃতিমুলক কাজের থেকে রেহাই পেতে পথ খুঁজতে জড়িয়ে ধরেন বাসুদেববাবুকে। জয়লাভ করে বাসুদেববাবুর দল। জয়লাভের সঙ্গে সঙ্গেই পূর্ব পার্টির বহু স্থানীয় নেতার সাথে কালু মস্তানও ঘরছাড়া। এই পাঁচ বছর কালু কোথায় আছে, কি করছে কেউ জানেনা। স্থানীয় মানুষজন তার ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ভোটের রেজাল্ট বেরোনোর দিন'ই।
তারপর অনেক জল গড়িয়ে গেছে। এক বিধানসভা ভোটের পেরিয়ে আরেক বিধানসভা ভোট এসেছে। মানুষের বিশ্বাস গড়েছে ভেঙেছে। মুখোশ খুলেছে অনেকের। দুরত্ব বেড়েছে বাসুদেববাবুর সাথে মানুষের।
এতোদিন সব ঠিক থাকলেও ভোটের নির্ঘন্ট বাজার সাথে সাথেই কপালে ভাঁজ দীর্ঘ হয়েছে পার্টির স্থানীয় নেতা সহ স্বয়ং MLA এর।
ভাবুক প্রত‍্যেকেই, চিন্তিতও। অবশেষ আলোচনা সভার নীরবতা ভেঙ্গে বাসুদেববাবু জানতে চান --- 'কালু এখন কোথায় থাকে কেউ জানিস?'
'শুনেছিলাম ওর শ্বশুরবাড়ির গ্রামে ঘর বানিয়ে থাকছে।' --- উত্তর আসে।
---- 'ওকে বল গিয়ে বাসুদেবদা ডেকেছে। দরকার আছে।'


কবিতা 

প্রবেশ নিষেধ
দেবাশীষ সান্যাল

পদ্মা কিংবা গঙ্গা
ঢাকা থেকে কোলকাতা
কোথাও তোমার চাকরী নেই যুবক!

কাঁধে বন্দুক
পশ্চাতে ১৪ প্ল্যাটুন তীরন্দাজ
রাষ্ট্রনায়ক এখন দেশ শাসনে বিভোর।
ওখানে তোমার প্রবেশ নিষেধ!
যতই চাও না স্বীকৃতি
বেকারত্বের অভিশাপ
তোমার পিঠে শতাব্দীর দগদগে ঘা হে যুবক!
যতই তোমার চোখে জাগুক বিস্ময়।
জেনে রেখো
এই জনমে তোমাকেই বেঁধে রেখে দেবে
বিপুল কংকালসার দেহ!
তোমার চেতনার দৈন্যতায়
কখনোই জেগে উঠবে না
পথভ্রষ্ট মহাকাল!
হায় অমানিশা কৃষ্ণপক্ষ
তোমাকে আর কে শেখাবে বলো
কার্ল মার্ক্সের অ আ ক খ?




নিবিড়  থেকে থেকে নির্জনে
পিনাকী দত্তগুপ্ত

একা থাকার উপহার তুমি ফিরিয়ে নিয়েছো
অতঃপর। আমি প্রতিবাদ করিনি; কারণ,
তুমি জানতে, যত কাছে আসবো প্রতিদিন,
ততটাই একা হয়ে যাবো দুইজনে। নির্জনে ।

রাতের অন্ধকারে ছায়া মাখে হেমন্তের বক।
ঝাপসা কুয়াশা নামে অবসন্ন আমনের মাঠে।
অচেনা নারীর খোঁজে ঝরে পড়ে চেনা লুব্ধক;
দীর্ঘশ্বাস জমে শেষ প্রহরের খেয়া-ঘাটে।

তবুও যখন তুমি ফিরিয়ে নিয়েছো তানপুরা,
জানাইনি দাবি, জানি ওই সুর বাজবেনা আর।
কারণ আমি জানতাম, আমরা ঠিক ততটাই
দূরে সরে যাচ্ছি প্রতদিন, যতটা নিবিড় হয়েছি
“চেতনে কিংবা অচেতনে”।


ফিনিক্স পাখি
মতিউল ইসলাম

"ন জায়তে ম্রিয়তে বা কদাচি-
ন্নায়ং ভূত্বা ভবিতা বা ন ভূয়ঃ।
অজো নিত্যঃ শাশ্বতোহয়ং পুরাণো
ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে" ||

ফিনিক্স পাখির ঠোঁটে এক টুকরো আগুন,
নতুন জীবনের জন্য মৃত্যু চাই,
পোড়া অস্থি আর বাসস্থানের মধ্যে থেকে
জন্ম নেবে নবজাতক.
চলো পবিত্র হওয়ার জন্য
আগুন জ্বালি,
পুড়ে যাক বাক্সবন্দী অহং,
দিগন্ত বিস্তৃত আমিত্ব,
চলো পুড়িয়ে ফেলি লালসার বীজ.
যমদূত আসার আগেই
আত্মায় আগুন দিই,
যমদূতের বিস্ফারিত চোখের সামনে-
নগণ্য মানুষ থেকে চলো
ফিনিক্স পাখি হয়ে যাই.

মিছিল
বিশ্বজিৎ মাইতি

পৃথিবীর ব্যাস বরাবর চলো আমরা মোমবাতি মিছিল করি-
জানি অন্ধকারে শুয়ে আছে আমাদের আত্মীয় স্বজন তবু
কুচকাওয়াজ থামাও প্রিয়তম
যুদ্ধ থেমে গেছে,
আমি দিয়ে এসেছি একশত গোলাপের চারা
যুদ্ধবাজের হাতে।
চলো এবার ভোরের রোদে ডুব দিয়ে আসি,
দিগন্তে মুখোমুখি বসব এসে আমরা
তারপর,
কে আছো কাঁটাতার গুটিয়ে নাও-
এখুনি মাটি ভেদ করে জন্ম নেবে উদ্ভিদ,
রঙচটা কফিনের পাশে।

 ক্যানভাস
সুশান্ত ভট্টাচার্য 

 উকুন এক প্রাণী বিশেষ

চুলের গভীরে
দ্রুত ফেলে শ্বাস

আমার ঝাঁকড়া চুল
আলতো চিরুণী চালাই

উকুন কি কবির বাহন
জল রঙে যাকে আঁকতিস।


যাবো ভেবে  
প্রত্যূষ কান্তি কর্মকার  

যাবো ভেবে যেতে পারিনি এখনও
যাওয়া মানে সমূহ অন্ধকার
স্তব্ধ হয়েছে সব তরবারি
বাঁচা মরা সনাতন ঘর বার
তরল হাওয়ায় ভেসেছে সব গান
আগুনের পরিপাটি সাধনার ভোর
বেঁচে থাকা ভেবে ছুঁয়ে গেছি যত মূল
তার সবটাই শুধু ঘন হয়ে থাকা ঘোর
রাত্রি নিবিড় হলে জোনাকিরা কথা বলে
আলোর বিন্দু প্রান্তরে যায় ভেসে
শরীর থেকে ঝরে পড়ে যায় বিপন্নতার পালক
আগুন শিখর ছাইয়ে ডোবে অবশেষে
মুঠোয় থাকা লাভার বিচ্ছুরণ
টেবিলের কোণে মাথা নুয়ে পড়ে আছে
ভুলে গেছি তার আপামর প্রবণতা,
কুহকের চোখ সংকেতে কাছে ডাকে


অক্ষর লিখি চল
শ্যামশ্রী রায় কর্মকার

আঁকড়ে ধরেছি স্মৃতির দরজাখানা 
পুরনো সময় হাসছে সকৌতুক 
অবাক হচ্ছ? তোমারও কি আছে জানা 
কোন দিকে যাবে জীবনের অভিমুখ? 

ভাতের থালায় জ্যোৎস্না ফুটতে দেখি 
খালের শরীরে ভাসে রূপবতী মাছ 
কিভাবে লিখব এইসব ভালোলাগা 
কিভাবে লিখব এত স্নেহময়ী গাছ?

আরও কিছু আছে এসময়কার কথা 
সব কথা নয় বৃষ্টি রৌদ্র মেঘ 
আরও কিছু আছে লজ্জিত শব্দাদি 
বোবা চীৎকার ঝলসানো উদ্বেগ 

নতুন কবিতা পাশ ফিরে শুয়ে আছে 
পুরনো কবিতা গায়ে লিখে দেয় ঋণ 
যেসব দশক আঁকড়ে ধরেছি আমি 
খুন হয়ে গেছে তাদের সোনালি দিন 

অক্ষর লিখি বাঁধভাঙা বিন্যাসে 
অক্ষর লিখি আগুন এবং জল 
ফুরিয়ে যাচ্ছে যেসব শিশু ও পাখী 
আজ সেইসব অক্ষর লিখি চল।

25 comments:

  1. ভীষণ ভীষণ ভালো লাগলো। "সাহিত্য এখন " এর শ্রীবৃদ্ধি কামনা করি।

    ReplyDelete
    Replies
    1. অন্তহীন শুভেচ্ছা প্রবালদা

      Delete
  2. ধন্যবাদ। পাশে থাকুন সবসময়। লেখা পাঠান batayan.bp@gmail.com এ

    ReplyDelete
  3. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete
  4. অসাধারণ, খুব ভালো হয়েছে ধন্যবাদ শ্যামশ্রী দি.

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ শুভেচ্ছা অন্তহীন

      Delete
  5. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete
  6. বাহহহহহহহহহ বেশ ভালো লাগলো শ্যামশ্রী দিদি

    ReplyDelete
  7. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete
  8. বেশ ভালো লাগল

    ReplyDelete
  9. প্রতিটি কবিতা পড়লাম। কোনো পত্রিকার প্রতিটি কবিতার এত সুন্দর মান ও নির্মান .... শুভেচ্ছা , শুভেচ্ছা শুভেচ্ছা

    ReplyDelete
    Replies
    1. অন্তহীন শুভেচ্ছা। শ্রদ্ধেয় লেখক এবং কবিদের প্রতিভাই পত্রিকাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

      Delete
  10. অন লাইনে সুন্দর ব্লগজিন। গল্প, কবিতাগুলি খুব ভাল লাগল। আগামী সংখ্যার অপেক্ষায় রইলাম। আশা করি সূচনা পাব। অনেক শুভেচ্ছা রইল।

    ReplyDelete
  11. অন লাইনে সুন্দর ব্লগজিন। গল্প, কবিতাগুলি খুব ভাল লাগল। আগামী সংখ্যার অপেক্ষায় রইলাম। আশা করি সূচনা পাব। অনেক শুভেচ্ছা রইল।

    ReplyDelete
  12. অন লাইনে সুন্দর ব্লগজিন। গল্প, কবিতাগুলি খুব ভাল লাগল। আগামী সংখ্যার অপেক্ষায় রইলাম। আশা করি সূচনা পাব। অনেক শুভেচ্ছা রইল।

    ReplyDelete
  13. আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে।নিশ্চয় সূচিত করা হবে। পাশে থাকবেন।

    ReplyDelete
  14. Ekti uchhomaner nibedon.mugdho holam poribesoner dhorone.

    ReplyDelete
    Replies
    1. আন্তরিক ধন্যবাদ। পাশে থাকবেন।

      Delete
  15. khub sundor hoye6e didi.egiye coluk duronto bege sahitya ekhon

    ReplyDelete
    Replies
    1. অন্তহীন শুভেচ্ছা গোপেশ

      Delete
  16. এগিয়ে চলুক 'সাহিত্য এখন'

    ReplyDelete
    Replies
    1. আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানবেন।

      Delete