Wednesday, 30 October 2019

শারদীয় সাহিত্য এখন, ১৪২৬ কবিতা সেকশন




বন্ধুত্ব
শঙ্খশুভ্র পাত্র

আশ্চর্য হই না ৷ "বন্ধু"— এই শব্দটিতে কতশত
আকাদেমি দীপ্যমান — সম্পর্কে উদাস, সরোবর...
সূর্যাস্তের ছায়া, সেতু — বন্ধনে নিবিড়, অনাহত
কবিতাজন্মের মতো অলৌকিক, প্রথম প্রহর...

বন্ধুত্ব — বন্ধুর, মসৃণ... পথ জানে গমনাগমন
এই যে রেখেছ টান — অদৃশ্য সুতোয় বাঁধা, প্রেম
শুধু এক যশোকাঙ্ক্ষা — দ্বিগ্বিদিক ধু ধু করে মন
বিধূননে এনে দেবে — মায়ার অধিক, যোগক্ষেম ...

আকাদেমি বাস্তবিক — রচনা, প্রকৃত প্রেমধারা
শর্তহীন আনুগত্যে কৃতবিদ্য আর স্মরণীয় ৷
মর, এ-জগতে হিয়া-মরমিয়া, তারা-মুদারায়
সুরের সৃজনে যদি জ্বলে ওঠে আঁধার-নিয়ন

তবে সে-বন্ধুতা খাঁটি, পথ জুড়ে অনন্তের আলো
পাশাপাশি হেঁটে যাওয়া — নীলকণ্ঠ-হাওয়ার পালক


পিঞ্জরে
অতনু ভট্টাচার্য

যেটুকু গান    তোমার দান    পঞ্জরে
চ্যুত চরণ     ওহে মরণ      মধ্যযাম
যত আঘাত    যেন স্বখাত    সন্ধ্যাদীপ
ওরে বাতাস    ঝরে পাতার    দিনগুলি
বলা কি যায়    রক্ত খায়       কেয়ারি সুখ
এত বিপুল     তোমার চুল     তরঙ্গ!
যদি কথার     গোপন ধার     অরণ্যে
পাথরজল      স্রোতের ফল    পাগলটি
এসো আকাশ   মাঠের ঘাস     শ্রাবণঘ্রাণ
সেই বনের     এ জীবনের     যেটুকু গান 



জীবন যেরকম
কানাইলাল জানা

ঘরের বাইরে গেলেই সব সময় মনে হয় এখনই ফেরার তাড়া কিসের?মনে হয় খোলা প্রান্তরে শুয়ে থাকি হাত পা ছড়িয়ে,সারারাত গা চেটে নিয়ে ফিরে যাক্ জোৎস্নাবৃক্ষ তার সব ছায়া ফেলে দিক্ আমার শরীরেহাওয়া সব গল্প ঢেলে যাক্ কানেচাঁদ তার মায়ায় ঘিরে ফেলুক আমার সর্বাঙ্গ যাতে ভোরবেলা উঠে দেখতে পাই শূন্য আমির কাছে বসে আছে পূর্ণ আমি...


রাস্তা

হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়



হাঁটতে হাঁটতে দেখি
আমার সামনে একটা নতুন সম্পর্ক
নিজেকে ছড়িয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে

পিছনে আমার মা
রান্নাঘরে ভীষণ ব্যস্ত
খুন্তি নাড়তে নাড়তে 
আমাকে রাস্তা এগিয়ে দিচ্ছে

দুয়ারে পুঁথি লিখতে লিখতে বাবা
চোখের ঈশারায় রাস্তা বলে দিচ্ছে

আমার পা টলতে দেখে
দিদি ঠোঙায় কাই দিতে দিতে
চোখ বড় বড় করে

আমার মনে হয়
মা, বাবা, দিদিতে কিছুটা মন রাখলেই
নতুন সম্পর্কটাকে টিকিয়ে রাখতে পারব ।


বিস্ময় চিহ্ন 
ভজন দত্ত 

আগে থেকে কেউ কি জানে
কতটা নুন লাগে পান্তাভাতে
কতটা ঝাল থাকে কাঁচামরিচে
শুধু চুমুতেই কি অভিমান ভাঙে
মেঘ কি জানে কোন খানে কতটা জল
কতটা কুয়াশা রোদ-ছায়া বা মায়া-জল
এত এত বিস্ময় চিহ্ন ওড়ে আকাশে
তারা কি সকলি বৃষ্টিফোঁটা হয়ে নামে
এখনো সেসব গুণে যায় কেউ কেউ
তাই কি বাতাস 'বহে' পাগলের পৃথিবীতে...

ক্ষীণস্বর ও লিপি 
অনুপম দাশশর্মা
বলেছিল-
বোজো চোখ, এনে দেব গোটা পৃথিবী।
বুজেছিলাম। পড়ল চোখে অন্তরজল।
ভেতর থেকে কেউ ফিসফিসিয়ে বলল-
এবার তোদের বিচ্ছেদ হোক।
বিচ্ছেদ ও গীতিময়
যেখানে উড়ন্ত সারসের ডানায় লেগে থাকা
শেষ বিকেলের রোদ্দুর
চকিতে কেড়ে নেয় কোন অন্তর্লীন চোখ
কীভাবে যেন রঙিন হয়ে ওঠে ধূসর
ভায়োলিনের সুর
টুপটুপ করে ঝরে অবিশ্বাসের অশ্রুজল
তুমি বলো কুয়াশা লেগে গেলে
কার্নিশে বিগত মুহূর্তরা সব সময় হৃতবল
আমি দেখছি সরে থাকা যাবতীয় অস্থিরতায়
ক্ষণে ক্ষণে বেজে উঠছে নবপত্রিকার আশ্চর্য বিউগল

চমৎকার
 উৎপল মান

যে তোমাকে মিথ্যে বলে এগিয়ে গেছে
যে তোমাকে সামনে রেখে হাসিল করেছে কাজ
যে তোমাকে বন্ধু বলে ভাবে, এবং
গোপনে সুড়ঙ্গ খোঁজে স্বভাববশত
যে তোমার খুলে দেওয়া দরজায় মাথা গলিয়ে
বেশরম ঢুকে পড়ে প্রাপ্তির মাঠে  
সে কখনও যুদ্ধের সামনে আসে না
মুখোমুখি হয় না তোমার আগুনের সাথে
উলটে চিমটি কাটে পিছনে তোমার
তেতো মদ গ্লাসে ঢালে, উল্লাস    
প্রেমিকার স্তন মুচড়ে বলে, স্যরি
যে তোমার সমুদ্রযাত্রায় নিজেরই চোখ ফুটিয়ে  
দেখেছে  অন্ধকার, বসে থাকে ঈর্ষার ঢেউয়ে
সে একদিন  তোমাকে এসে বলবে তবুও
‘ভাল আছিস?  কতদিন দেখা হয়নি বল !’

ঘর সংক্রান্ত জ্যামিতি
নবকুমার পোদ্দার 

বাইরে পুরোটাই আকাশ
শুধু ঘরের ভেতর
জোনাকি জ্বলে

ঘরের পা নেই
থাকলে পৃথিবীটা
যিশুর মত হতো

যে ঘর চারদেয়ালে আটকে থাকে
সেখানে 
কেউ একজন নিশাচর।


চিহ্ন 

মগ্নতা,
ভাগ হয়ে যায়।

সুখকে খোলামুখ রেখে 
যারা বেড়াতে গেছে 
তারাই জানে 

ঠিকঠাক তালাচাবি না আটকালে 
সুখেরও অসুখ করে;
ভাঙা, ভাঙা নির্বাসন
জড়ো হয়।


আয়নার কথা
বহুবার লিখেছি
আয়না ভাঙলে মনের ঘর
শুয়ে পড়ে 

প্রেমকে যারা ভেলা করে 
ধরে রেখেছে 
তাদের আর ফেরা হয় না

হাড় ফেটে ঘাস ফ্যাসফ্যাসে হয়ে যায়।

ব্যাধ
অরুণাভ রাহারায় 

কবিতা তা-থই বাজে জলে, সারাঘরে
উঠোনে বিছায় মায়া দুর্বার কথন
সবুজে-সবুজ খেললো গাছগাছালির
এখন সময় শুধু পাতা ওড়াবার

কী পাতা হাওয়ায় ওড়ে জানো তার নাম?
যোধপুর পার্ক থেকে বাতাসে হাঁটলাম
দু'চোখ উড়েছে শূন্যে রে ঘটনাবলী
নদীতে ভাঙন চলে... শান্ত সরোবর।

সাঁতারে বিষাদ ওঠে, ওঠে বিষোদ্গার
পেয়েছি অকূল ঘূর্ণি, চূর্ণী-জলঙ্গিতে

হাওয়ায় নিষাদ দাও, ওষ্ঠ দাও তুমি
জোনাকির আলো দাও, দাও কষ্ট ঢাকি।



মৃত কথকের গান
---সবর্না চট্টোপাধ্যায়

ঘুমন্ত পদ্মের মতো বোঝা ঠোঁটদুটো
খাক্ করে দেয় সমস্ত চৈতন্য।
শুধু আগুন আর আগুন
লাল টকটকে হয়ে ওঠো। বাদামী বৃন্তে
যেন জাগ্রত লাভা...
পুড়িয়ে দিচ্ছে
ঘুমন্ত ইহলোক।


তৃষ্ণা
সুতনু হালদার

সেই প্রেক্ষাপট এখন না হয় ভুলেই থাকি;
বরং, কিছুটা সামনের দিকে তাকানো যাক-
সেই পথ, সেই নদী, সেই ঢেউ 
সেই চেনা মুখ আর রহস্যময় চোখ!
হালকা সুরে গেয়ে ওঠা গানের কলি-
'সারা পথের ক্লান্তি আমার সারা দিনের তৃষা...'

প্রতিধ্বনির বহুমাত্রিক জন্মঋণের 
সুর মূর্ছনা সকল দরজা-জানলা খুলে দ্যায়; 

এক নিরুচ্চারিত কণ্ঠ নিমগ্ন পথিক হয়ে আমার
রক্তকণিকার যাবতীয় স্পন্দনে আবার ফিরে আসে;

তখন আর চিনে নিতে ভুল হয় না...

প্রতিটা শিরায় শিরায় একটু একটু করে বিষ ঢালতে গিয়ে
চেনা ছকে এগিয়ে যায় আদম-কুয়াশা!

রোজনামচা হয়ে এগিয়ে আসা নতুন মেঠোপথ 
হঠাৎ আত্মভোলা হয়ে গেয়ে ওঠে-
'মাঝে মাঝে প্রাণে তোমার পরশখানি দিয়ো'



 
হলুদ পাতা
দযা়ময় পোদ্দার 

কখনও কখনও তোমার  বিষোদ্গার , আর 
ত্যাগ করে যাওযা় একান্তই জরুরী-
আমার পূনর্জন্মের জন্য !

আবহমন্ডলে ফোটে রজনীগন্ধার বন,
সুপবন আসে ভোমরের ঠোঁটে, আর 
মেদের নিচে উষ্ণতা ঝরেছে স্বখেদ ;
তারপরে তুমি ভীনগ্রহের জীব,
তারপরে আমিও নাবাল ভূমির জাতক

রোদমুখো উঠোন পেরিযে়- দুধমুডি়,
চামচ-বাটি কলতলায় রেখে ঘুমোতে যাও
চাঁদঘরে,আর
সেইসব ছাযা় এসে পডে় তুমুল ঝড়-জলের 
নাবাল মাটিতে,
আমি ভেসে যেতে থাকি ধুযে় যেতে থাকি
হলুদ পাতায় !


শান্তিপর্ব
শু ভ ঙ্ক র  দা স

আমাদের জন্মটাই ঘষামাজার,যুদ্ধের, 
তাই যুদ্ধ থামানো যায় না!
আমার মুখের সামনে যে বন্দুক ধরে আছে
সে তো আমারই অক্ষম আয়না।

অজুহাত আছে অজগরের চেয়ে শতগুণ লম্বা
অসহায়ত্ব,অন্ধত্ব আর অন্ধকার
তাকে টেনে আরও লম্বা করে দেয়

শুধু মুখগুলো শুকোয় মুখোশের  রোদসুতোয়...

যারা মরে গেছে,তারা সব মাতৃগর্ভে ফিরে যাক

এটাই একবচনে বলে স্বান্তনা আর বহুবচনে যা শান্তি।    



আমায় কিছু হাত দাও


কৃষ্ণেন্দু দাসঠাকুর

এ কলোনিতে শেষ কবে আলো এসেছিল মনে আসে না
মুখোমুখি দাঁড়িয়ে।রাত আঙুলের কায়দায় দিন হয়ে যায়
শুধু শোনা। শুধু বলতে হবে বলেই বলা। অলিখিত নির্দেশ  
অথচ দুচোখে কালো পট্টি। বহুদিন সূর্যের আলোয় আসেনি
হাওয়ায় ভাসছে অজস্র কালো কাপড়
আমি বছরের পর বছর বহু শহর,গ্রাম হেঁটেছি
সব কীভাবে খাল পাড়ে বকের মতো নিশ্চুপতাকে মেখে নিয়েছে
গ্রামগুলোর মুখে গভীর রাতের মতো রক্তের স্বাদ লেগে 
কিছু হাতের খোঁজ--- বড্ড দরকার হয়ে পড়েছে
উভয়ের মাঝে দাঁড়িয়ে যে হাত তুলে বৃষ্টি নামাবে


                                  


এক অদ্ভুত সন্ধ্যায়
 জ‍্যোতির্ময় মুখার্জি


এক অদ্ভুত সন্ধ্যার মুখোমুখি হয়েছি
এই তরল সন্ধ্যায় আঁধারের মুখ ছমছমে
উঁকি দিয়ে দেখলাম, বেশ কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি হয়েছে
এখনও বেশ মেঘ, কোথাও আলোর দেখা নেই
অথচ, আলো তো অন্ধকারেরই সন্তান
এই ভেবে পা বাড়ালাম
হাতের তালু বেয়ে যা কিছু পুরনো অহংকার
খুলতে খুলতে, ক্রমশ নগ্ন স্বাচ্ছন্দ‍্যে
ঘাঁপটি মেরে কেউ কি আমার অপেক্ষায়


চোখ
দেবেন্দ্রনাথ দাস
কাল রাত্রে নাভিশ্বাস
ঝোড়ো হাওয়ার কাছে রেখে গেছি বোধ
তুমিও সন্তর্পণে চেয়ে দেখো নারী
কালেভদ্রে ভগবান তিনিও বিবশ
অসহায় রক্তহীন শিশু চেয়ে দেখে
চেয়ে দেখে নিস্পলক চোখ
রাত্রি কি ঘুমায় কখনো !
অবোলা গাছের কাছে হেরে যায় দু-একটা পাখি
মাথা কোটে 
আমি শিত সঙ্গোপনে যাই

এতাবধি বিবস্ত্র পৃথিবী বুনে যায় স্বপ্নের জাল
জন্মপঞ্জি ভোলা কাদাখোঁচা যোনিদেশ খুঁচিয়ে চলেছে আনমনে
চুনোমাছ, গুটিকত গেঁড়ি গুগলি এই তো কড়ার খোলে জোটে !
কিসের জন্যে চেয়ে থাকা বলো
একচিলতে সুতোর মতো নদী
দুটি বেলা খেতে পরতে দাও ! 
তুমি নাকি জোয়ান মরদ..


তারপরের ছায়ারা
তাপসী লাহা


আকাশে ভাসে মেঘ

গুচ্ছ গুচ্ছ স্কন্দরাগ থেকে আদল খুঁজি ঠিক কোথায়,

উত্থাপিত ভ্রু গন্ধ মোমের চিকন
পল্লবিত সন্দেহের মত একটু,

ঠিকানা হারায় অত্যাশ্চর্য সে প্রদীপ নেই
ভুলে গেছি রত্নগুহার  নিভাঁজ পাসওয়ার্ড,

কোথায় আলিবাবা,   মর্জি   না থাকলে  কেউ কাউকে ভুল বুঝে যায় ।

গুমর রঙে নৈশকন্যার  অক্লান্ত রুপ, বিরতিহীন
বর্ষাতির তীরে  নিষ্পলক  মেঘ স্নান শেষে গামছা শুকোয়।

জলের ছায়া পড়ে , বাড়তে থাকে কোলাব্যাঙের জ্বর,

 চেনা হুইশেল            বিমিশ্র ডাক

মৌন   মর্জি   না           রা 

তাড়া থাকে,   মেঘ  গলে যায়। 



পরাবাস্তব জোনাকদল
উদয় শংকর দুর্জয় 

দহন নিভিয়ে সূর্য-পরাগ। 
এ বর্ষা পেরুলেই হিমকাঠ বোঝাই হাওয়ারথ দাঁড়িয়ে থাকবে ত্রিনেত্রে; এক চোখে স্নাত রয়েল-ডক, অন্যাকাশে ধূপজ্বলা শিউলির আধো-গোলাপী ঠোঁট। বিধুর অয়ন ছেড়ে লবঙ্গ বোঝাই জাহাজ এসে ঘ্রাণ কুড়িয়ে নিতেই, বিহ্বলে লেখা একশ'টা অষ্টোক সুর ভেঙে যখন উড়ে যাবে রহস্যময়ী খমক, তখন তপ্ত পারদে ঢালা প্রপঞ্জের রঙ, মিশে যাবে দগ্ধ অভ্রের গলিত ঘ্রাণে। এরপর স্বর্ণকুচি মাখা শরত যেন, পরাবাস্তব মায়ার টানে স্টারলিঙের ডানায় লুকিয়ে পাড়ি দেবে ভৈরবের কোলাহলে। 

সপ্তসুর-দগ্ধ-স্নাত-সাতী। 
সন্ধ্যাকুমারীসেঁতার হেঁটে এলে জলের পাহাড়, এক অবিরাম ঠুমরি নেমে পড়ে রাত্রি বক্ষে। কতবার খুলে পড়েছে সে উদ্যানের গোপন বাক্সে জমা মাস্তুলের ঘুড়ি! তবু উড্ডয়নের প্যারাসুট সংগীত, অচেনা ভেবে পাড়ি দ্যায় আরেকটি মহাকাল। 

অকারন কোলাহল বোহেমিয়ান।
পাথরের উপর পাথর ব'সে, জমাট বরফ খুলে রাখে কপাট; অযুত লহরী ভেঙে, অতিথি হয়ে ওঠে রাক্ষসীর সবুজ চোখ; কর্নিয়ার ফাঁকে পাঁচতারা বিকেল তাড়িয়ে আনে জুনিপার গ্রাম। শরত তখন হরিদ্রাভ আগুন মেখে সবে ভোরের বাদ্য শুনিয়েছে বাকলের কর্ণকূহরে। হিম-রিম-হিম যেন পিয়ানোর রিড থেকে তুলে নিয়েছে আগমনী ট্রাম, হুইসেলের লোকালয়ে বনোহরিনী, পাতার অরণ্যঝোপ থেকে জোনাকদল আলো কুড়িয়ে এনে, কালভ্রমনে প্রহর রেখেছে বাজি। 

পত্রাদি কাঁদে
মাহমুদ নোমান

আয়নার সামনে আমি একা
জেনে গেলেই,
পুকুরের ঠাণ্ডাপানির হাওয়া
বুকের কেশ নাড়ায়,
কেউ বুঝি গোড়ালি দিয়ে নাড়াচ্ছে
ছড়ছড় শব্দ ভেসে আসে,
ডুবুরি ডুব দেয়
টের পাই আমার ঘর নাই -
শার্ট রাখবার হ্যাংগার নাই,
সিগারেট ফুঁকার আগুন খুঁজে
কম্বলের তলে চিমসে যাওয়া,
ডায়েরীর ভাঁজে চিঠির সাথে
পাঁপড়ি ছড়ানো বাসি গোলাপ
অশ্রু হয়ে যায়...


রূপান্তরের কোলে
দেবার্ঘ সেন

যখন তুমি ভয় পেয়ে আমাকে আঁকড়ে ধরো
আর মাথা গুঁজে দাও আমার বুকে,
আমি তোমার চিবুক ধরে মুখ তুলে জিজ্ঞেস করি,
কি হয়েছে?
আর তুমি বলো ভয় লাগছে খুব।
বলেই, চোখের পাতা বারকয়েক ফেলে
আমাকে আবার জড়িয়ে ধরো নিবিড়ভাবে।
বিশ্বাস করো তখন,
প্রেমিকের থেকেও নিজেকে
অনেক বেশী গাছ বলে মনে হয়।

আর এভাবেই হয়তো একটা আনকোড়া ভূতের গল্প
রূপান্তরে বিশ্বাসী হয়ে
গ্রাহ্য করে প্রেম। 


শাশ্বত ফাংগাস
দেবাশিস ঘোষ
ঝলসানো বিশ্বাস আমাকে ঘুমোতে দেয় নি বহুদিন।
অন্ধকার রাতচরা ঘোড়ার গাড়ি আমার উঠোনে
সাড়ে দশকেজি স্টারডাস্ট ঝেড়ে দিয়ে যায়।
বিকেলের রঙচোর বুড়োদের চশমাতে
জমতে থাকা শাশ্বত ফাংগাস 
আর লুপ্তপ্রায় মাংসপিন্ড অনাবশ্যক বয়ে বেড়ানোর
এপিটাফ কষ্টবোধ রোদ্দুরে জারিয়ে থাকে
আচারের মতো।
এসব দেখতে থাকা আর ছায়াদের রবারধর্মীতা
নিয়ে কথোপকথনে জল বাড়ে 
ছুঁয়ে ফেলে ফিফথ ডিমেনশন


 এমিলিও ফিয়াশি
 সুবিনয় হেমব্রম 


এমন নিটোল গোল
হাতে নিয়ে বিশ্বাস হবে না
যে ধরে আছি 

আমি হলে পেছনের দরজা দিয়ে যেতাম
গিয়ে ঠোঁট দিয়ে আলগা করে দিতাম হুক
একটু ঝুলিয়ে দিতাম

বাস্তবে যা পাইনি
শিল্প কি শুধু তাই!
এত নিটোল কেন
পৃথিবীর মতো দুদিকটা একটু চাপা
একটু ঝুলে থাকলে তো
পাথরেই জীবন ফুটতো!
পাথর বুকে নিয়ে ফেটে যেতাম
রক্তহীন নদীত্বকের মত
শিল্পের প্রয়োজন হত না

কান্নার প্রয়োজন হত না




মৈথুন 
 

চন্দন বাসুলী


পারমিতা সেন ;
মৈথুনের আগে তোমাকে ভাবি,একান্তে 
যতটা গভীরে না ভাবলে নিজের করে পাই...

উষ্নতা আনি নির্লজ্জ্ব শরীরে ,উন্মাদ
খুলে ফেলি রাত পোশাক-স্যাতস্যাতে অন্তর্বাস

উপস্থিত হও এক সমুদ্র নগ্নতা মেখে
পাহাড়ের দৃঢ়তা নিয়ে আলিঙ্গন 

পর্যবেক্ষণ করার দুদন্ড সময় নেই ,অস্থির 
সরাসরি অন্দরমহলে প্রবেশ করি

না লাগে অনুমতি-না বিপরীত উত্তেজনা 
খানিক পর ফিনকি দিয়ে বেরিয়ে আসে মেঘলা বীর্য

চাদর জুড়ে পড়ে থাকে অজস্র নিষ্পাপ প্রাণ 
মুচকি হাঁসে জেগে থাকা পূর্ণিমার চাঁদ 

পারমিতা সেন ;
মৈথুনের পরে তোমাকে ভাবতে পারিনা 
হয়তো সম্মুখে আর দাঁড়াতেও পারবনা !



দিনগুলি

রাজীব মৌলিক


একা থাকার দিনগুলি খুলে দেখি
সেখানে কেউ একা নেই
জোড়ায় জোড়ায় শব্দ গেঁথে আছে
একটি পাখির মুখ থেকে অন্য পাখিটি খুটে খাচ্ছে দিন
সজাগ প্রহরীর মতো জেগে দেখে
তারাদের ঝরে পড়ার মুহূর্ত,
গোধূলির মতো উজ্জ্বল আলপথ
ঘর ভোলা পথিকের ছাপ




প্যালিনড্রোম
গোপেশ দে


সামনে দিয়ে যে রাস্তা গেছে
পেছন দিয়েও একই রাস্তা

সকাল বেলার খিদেটা ঘুরে ফিরে আসে রাতে
একটা অলৌকিক যন্ত্রণা দিনের যে সময়ে থেমে যায়
 
সেখান থেকেই প্যালিনড্রোম
পেন্ডুলামের মত দোল খাচ্ছে মগজের চিন্তাস্রোত
চিন্তাকে সম্বল করে ঘুরছি একই কক্ষপথে

একই জলবায়ু আমার শরীরে
সকাল থেকে রাত
রাত থেকে সকাল...




কান্নারা দীর্ঘজীবী হোক
দীপ্তেন্দু জানা

১.
সুন্দর তোমার পিঠে
আজও দুলছে অন্ধকার বিনুনি

কত কি পেলাম
তবুও শূন্য রয়ে গেল বারান্দা 

আর সব রেত
তাই সূর্যের কান্নার ভেতরে না ঢুকে পারিনা



২.

এই কান্না তুমি দিয়েছো 
তাদের কি আর একা ছেড়ে চলে আসতে পারি 

যেখানেই যাই না কেন 
ধূপের বিনুনি ছড়ায় 

এই কান্না জ্বালো এই কান্না আলো অজস্র চিঙ্গারি 


৩.


কি নির্মম কান্না দিলে

কান্না লেগে
জন্ম নেয় চোখ

কি মায়াময় কান্না  দিলে

কান্নারা 
দীর্ঘজীবী হোক




অগ্নি বসু 
( কবি অগ্নি বসু স্মরণে লেখা )

সন্দীপ দাস 

চলে যেতেই পারে  , 
তাই বলে কি ছেড়ে যাওয়া যায় ? 
থামিয়ে দিতেই পারে 
তাই বলে বজ্র কলম ফুলের মত নুইয়ে পড়বে পায় ? 

জটায় তার আগুনের উচ্ছাস  
হৃদয়ে বাঁধন ভাঙা উল্লাস 
নতুন যুগের সৈনিক কত শত 
তারই অক্সিজেনে আজও অক্ষত 
নিঃশ্বাসে - প্রশ্বাসে 
ঘুমন্ত ওই শরীরের নাগপাশে 
আবদ্ধ হয়ে এগিয়ে চলে 
মৃত্যুর ওই কৃষ্ণ গহ্বরের অহতলে ।

নিস্তব্ধ হয়ে যেতেই পারে সব 
তাই বলে সূর্যের আগুন কি নিভে যায় কোনদিন ?
সে শুক তারা মানুষের ; সন্ধ্যা তারা হয়ে জ্বলবে এবার 
প্রতিটা কালো অক্ষরের আলোতে ।



'সে'
 হিয়া

মোহর 'সম্ভাবনা'-র শব্দে হাহা হাইওয়ে
রব তুলে হাসে।
মনখারাপের কারণ খুঁজব না,
একনাগাড়ে লিখছি আর লিখেই যাব।
নাম লিখছি সর্বনামে!!
'সে' বড় দীর্ঘকাল,আমার সিনিয়রের প্রেমিক।
বৃষ্টিদিনেই তুলসীপাতার রস, ডার্ক চকোলেট , তুমির আড়ালের তুইটাকে বড্ড বকি ,
ঠাণ্ডা জলে স্নান, অনিয়ম - বাজে অনিয়ম।
একটুখানিও কথা শুনিস না।
তুই-তুমিতে ব্র্যাকেট ক্লোজড হলে আমি তোমার দেওয়াল বিদ্রোহ , চোরাগোপ্তার অফিস যাপন ফেলে তুমি আমি সিঁড়িতে চুমু খাই।
মেট্রো আমি আজ তো চড়ব না,
চড়লে চড়ব পাহাড় কিনারা।
এখন আমার ঘোরের ব্যাকরণ
মওকা বুঝে মঞ্চে উঠবে 'সে' ।
আদিখ্যেতা শুঁয়োপোকা হলে ভালোবাসা পেরজাপতি বটেই!
নুন লঙ্কার ভাত পাতায়  মেখেছি,
' ক্ষীরের পুতুল ' আসন
  পেতেছি...



আশরাফ হোসেনের কবিতা
বড় ব্যস্ততা-  

বেলকনির গায়ে রোদ এ‌সে প‌রে ভোর পাঁছটায়।
তু‌মি ব্যস্ত হ‌য়ে উ‌ঠো ,বেলুন বু‌লি‌য়ে ফোলা‌তে রু‌টি। আরো ব্যস্ত দুপু‌রের রান্নায়,মাছ ও সবজির আয়োজ‌নে ।সময়টা বে‌ড়ে যায়অ‌নেকটা তোমারই মত।‌ বেলা নী‌চে আসে অবসর হ‌তে হ‌তে, শাড়ীর আঁচল থেকে বেলক‌নির কাঁধ‌ বে‌য়ে‌ বৈশা‌খের রোদ্দুর ঝু‌লে পরে ফুল আর ঘা‌সের বাগা‌নে। কোন শিল্পীর মোটা পে‌ন্সি‌লের কা‌লোমেঘে আঁধার না‌মে,‌ যেন এখনই  ঝড় হাওয়া ছুঁ‌য়ে দে‌বে  ঘাস ও ফু‌লের বাগান ।

নস্টালজিয়া
রাবাত রেজা নূর


এই মহানগরের বুকে বৃষ্টি নেমেছে এখন;
কে জানে, হয়তো বৃষ্টি নেমেছে আমার মফস্বলেও
সব দিন ঘুরে ঘুরে আসে
সব জীবন ঘুরে ঘুরে আসে
শুধু ঘুরে ঘুরে আসে নাকো সেই সব রঙিলা সময়।


তবু খুঁজি  
কাকলি দাশ ব্যানার্জী

আজকের দিনটা ঠিক তরতাজা ভেলভেটের মত ,
কেমন যেন একটা জ্যান্ত  ভোর-
যার সারা গায়ে খোদাই করা সুর, স্বর ,শ্লোক,
শিরার রক্তকে ছলকিয়ে দেয় ,

এরাই খোড়কে কাঠি হয়ে খুঁচিয়ে দেয় -
মৃতপ্রায় স্মৃতির টার্মিনাসের অতীত ঘ্রাণমাখা 
অনিয়মিত কথাদের ,

মহিষাসুরমর্দিনী , চায়ের কাপের ধোঁয়া , 
আলো আঁধারের অবয়ব সব কিছুর মধ্যে হাতড়াই
সেই মোলায়েম প্রয়োজনটাকে ,
ওর নাম শূন্যতা,

আমি জানি 
ওরা আর আসবে না 
ভাঙা সেতুটাকে মেরামত করতে ,

তবু খুঁজি  যদি ম্যাজিক কিছু হয় ।


একমুঠো চাঁদ
তাপসকিরণ রায়

সূর্য তখন তার শেষপটে লাল আলো ছড়াচ্ছিল।
এ দিকে ইচ্ছের লাল আপেল দুটো নিয়ে
লোফালুফি খেলতে খেলতে
সন্ধ্যে পার হয়ে গেলো।
চুপিচুপি আকাশের চাঁদ তখন
আমার জানলা গলিতে ঘরে ঢুকে আসে।
চরিত্রহীনতার লক্ষণগুলি শরীরের মধ্যে
কেমন খুঁটে খুঁটে যাচ্ছে দেখো !
এক মুঠো চাঁদ ধরে আমি চুমু কাটতে পারি
এই সব ব্যভিচার ও ধর্ষকাম এড়িয়ে
চুপিচুপি চাঁদও যে কি ভাবে কলঙ্কিত হয়ে গেলো!
আমিও ধপধপে জ্যোৎস্নার বিছানার
মৈথুন দৃশ্যগুলির কামনা এঁকে নিচ্ছি।
এক জ্যোৎস্নারানীকে শুইয়ে রাখি ঠিক আমার পাশটিতে
তারপর সমস্ত প্রেম ঢেলে দিয়ে আমি বিসর্জিত হই।


গাঁথা
মৌমিতা ঘোষ

পাখিদের শিষ কুড়িয়ে সকাল ভরি। যে আমি কোথাও নেই তাকে জড়ো করে এনে বসাই অলিন্দের এক চিলতে রোদে। দুটো মানুষের যাত্রাপথে রোজ রোদ ওঠেনা,উত্তাপ সঞ্চয় করে রাখতে হয় ঠোঁটে। ছায়াপথ ছিঁড়েখুঁড়ে নক্ষত্র সাজিয়ে রাখি।এই সব কিছুর মধ্যে কয়েক টুকরো আয়না হয়ে ছড়িয়ে আছি ।‌অনেক প্রতিচ্ছায়া পড়ে। চোখ বুজে ফেলার অভ্যেসে কাটাচ্ছি বহুদিন। বহুদিন খিলখিল হাসি গত জন্মের বিস্মরণের মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছে ভোরের স্বপ্নে। পাথরের অন্তরমহল থেকে আলো এনে সাজাচ্ছি বাতিদান।
টুকরো হয়ে যাওয়া, ছড়িয়ে পড়ার মধ্যে দিকশূন্যতা আছে, দিকভ্রান্ত হওয়া নেই।

একটা লম্বা-টানা রাস্তা পড়ে আছে।এপার ,ওপার জুড়বো বলে আমি শুধু ঠোঁটে করে জোনাকি সাজিয়ে যাচ্ছি।

পাখিদের শিষ কুড়িয়ে সকাল মেখেছি। টুকরোগুলো জোড়ার ম্যাজিক তুমি শিখে নিলে ভৈরবের সুরে কাকলির কনসার্ট বাজবে।

এসো,রোদে ডুবিয়ে দাও ম্যাজিক আঙ্গুল।



হয়ে উঠতে চাইলেই

মৌমিতা মিত্র


"তুমি" হয়ে ওঠার পথে
প্রধান বাঁধা তুমি।
কারণ হয়ে উঠতে চাইলেই
সম্পর্কের দাবি ভাঙতে থাকে।
অনায়াস স্পর্শ শর্তসাপেক্ষ হতে চায়।
ভাগ করতে ক‍রতে
জ‍্যামিতিক চিহ্নে এসে
থমকে যায় প্রতিটা দিন।
তখন দেওয়ালের গায়ে শুধু
বুধবারের হিসেব।
দীর্ঘতম হতে হতে দিনগুলোর
প্রান্তে কখনো যাওয়া যায় না।

হয়ে উঠতে চাইলেই ভেঙে যেতে থাকে
সব প্রতিশ্রুতিমাখা মুহূর্ত।



আয় তোকে ছেনে দেখি



শুভদীপ রায়

আমি তার বুকের ওপর শান্তির দ্রবণ প্রস্তাব করি
সে হৃদয় বিষুব ধরে ভূগোল বোঝাতে থাকে
মাধুকরী শেষ হলে দুটো ফুটিয়ে নিই শব্দের খই
কে কাকে লাঞ্ছনা করে সখি, আছে সাধ্য কার?
দেখি- নেপথ্যে অনন্ত আগুন জ্বলছেই
অতএব প্রতিবাদ আঁকা থাক চোখের ক্যানভাসে

না! না! না মানবোই না এই নাড়িছেঁড়া রক্তদহন
বাদ সাধে রামধনু রঙের অসুখ
ঘিরে ধরে মুখবই, লাল নীল রঙের মুখোশ
পুষেছি নখের দাগ, শিলাজিত পৃথিবীর ছবি
আছে কিছু শঙ্খস্মৃতি…
তবে কি প্রতিজ্ঞায় ছেনালি শেখাবি?

ঋতুভস্ম চুষে চুষে নাভিতে এঁকেছি নিম্বাস মেঘ
দেখি- ঠোঁটের স্পর্শ ছুঁয়ে নিভে যায় পলাশের ইঙ্গিত
তবু বুনে রাখি ভ্রুণবীজ সজীব আশ্বাসে
ভাসান প্রস্তুত রাখি বারুদ অক্ষরে
অথবা স্লোগান ভাসিয়ে দিই সামাজিক স্রোতে
জাগতিক সুখের কাছ বলি হতে পারে না বিপ্লব
অতএব – আয় তোকে ছেনে দেখি
           কতটা সরীসৃপ তুই
           এবং কতটা বাস্তব


ছড়া
বিজয়া
 অশোক কুমার ঠাকুর

আজকে নাকি বিজয়া
অসুর নাশের দিন !
ক'টা অসুর ধ্বংস হলো
একটু খবর নিন ?

সমাজ বুকে হাজার অসুর,
একটা থাকে অন্তরে
সেই অসুরটা ধ্বংস হোক
অসুরনাশি    মন্তরে।

যে অসুরটা সবার বুকে 
বসত করে থাকে
আজকে তাকে ধ্বংস করে
অর্ঘ্য দিন মাকে।

পাপমুক্ত মানুষ হোক
দূষণমুক্ত  সমাজ
মনের কলুষ বিনাশ করাই
অঞ্জলি হোক আজ।

শিউলিতলায়
রণজিৎ সরকার

লাগল ভাল মনটা খুশি ফিরে দেখা এমন সাঁঝে
সোহাগ নূপুর বাজিয়ে দিলি কেমন করে বুকের মাঝে

কলেজের সেই দিনগুলো সব ফিরে যেন এলো আবার
এক নিমেশে হুস করে, সময় কেটে যেত সবার

একলা রাতে শিউলিতলা জোনাক জ্বেলে আলো
তোর মুখটি দেখি পলকহীন তিয়াস মেটে না লো

এই দেখাতে একটু ছোঁয়া ঠোঁটের ভাঁজে মিষ্টি হাসি
বয়স আজ পেরিয়ে গেছে,তবু শিউলিতলায় আসি