Showing posts with label কবিতা. Show all posts
Showing posts with label কবিতা. Show all posts

Sunday 6 June 2021

শর্বরী চৌধুরীর কবিতা

 





জীবন 


                      


মৃত্যুর সম্মোহন উপেক্ষা করাই জীবন। 
স্টেশনের প্রান্তে এসে মনে পড়ে প্রথম
চুম্বন। একাকী গলিতে দাঁড়িয়ে যে মেয়েটি 
হাতছানি দেয়, তারও আছে প্রথম আদরের
স্মৃতি ! পঙ্কিল জীবন তাকে স্পর্ধিত করে ;
সেও বাঁচে নতুন সকালের আশায়। 

Saturday 22 May 2021

সুপ্রভাত মেট্যার কবিতা

 




অশ্রু খুশি


ভোর হলেই আমি চোখ ফিরে পাই।
ধুলোর উড়ে যাওয়া দেখি, গ্রামের পথ জুড়ে
আর পাখি শব্দের হই।
আমার সমস্ত বালক-জীবন ,ধান ক্ষেতের মধুর উল্লাসে যেন নেচে নেচে ওঠে!
রবীন্দ্রগানের সুর ভেসে যাই, আর রঙিন হয়ে পড়ি।

স্মৃতি কিছু উসকে না-দেখাই ভালো ।
বুকের উপর দিয়ে পিষে যাওয়া চাকার গাড়ি
আমাকে রাস্তা দেখায়। সেই রাস্তায় আমি পথ হাঁটি।কবিতা ওড়াই।  কষ্ট পাই খুব । আর
নোনা সময়ের সেই কষ্টেের ভিতর দিয়ে, হাসতে গিয়েও দেখি, অশ্রু-খুশির আমার জল নেমে আসে।তাই সময় পেলেই তোমাকে লিখি।
ভেতরের সমস্ত অন্ধকার কথাগুলি আমার ,
সত্যের পাথরে ঘষে - মেজে মস্তিষ্কে তুলে রাখি। আর কখন একটা নিজস্ব আলোর হয়ে যাই জীবন ।

Friday 21 May 2021

পল্লব তেওয়ারী

 





রোজনামচা



সকালের জলযোগে
পানীয় মিশিয়ে রাখি,
মধ্যাহ্নকালীন ভোজে
মেছোগন্ধ লেগে।

ফসলের মাঠ পোড়ে,
সতর্কে নারীর কান
বিষাদের কাছাকাছি
শতচ্ছিন্ন ওড়ে।

গর্জনের মধ্যরাতে
নেই চলাচল,
সুতীব্র কান্নায় তাই
কন্ঠে ধরেছি হলাহল।    

রবীন বসুর কবিতা






 ব্যথার জ্যোৎস্না 



যদি আসো তোমার পাশে বসি

আমি তো সেই তোমার চেনা পড়শি।

এতদিনের জানাশোনা সব কি

হতে পারে এমনতর মেকি!


যদি আসো তোমার পাশে বসি

আগের মত গল্পগাছা করি,

সেই যে গেলে আর না কভু ফিরলে

দুঃখ নিয়ে তোমাকেই যে স্মরি।


সুজন আমার বন্ধু আমার, তুমি

ফিরে এসো আমার উঠোন পরে,

গলা ধরে গানের স্রোতে ভাসি

স্মৃতির ঘন্টা অন্ধাকারে নড়ে।


হাওয়া বয় পাতা খসে যেন

সময় শুধু পুরাতন হয় কেন?

বুকের মধ্যে কারা নড়ে চড়ে

আবছা সব ঠাওরে না পড়ে।


তোমার কথা তোমার ছবি জাগে

আমার সকল আকুলতার মাঝে,

শিউলি যেন অবহেলায় ঝরে

আমার শূন্য একলা উঠোন পরে।


তুমি এসো ফিরে এসো বুকে

আরোগ্য হও কঠিনতর অসুখে।

আমার পরান তোমার জন্যে কাঁদে

তুমি আমার ব্যথার জ্যোৎস্না চাঁদে!

Friday 22 January 2021

অতনু টিকাইৎ,কবিতা,সাহিত্য এখন শীতসংখ্যা ২০২০-২১,

 





লকডাউনের কবিতা 



গেড়ু একটি বাবার নাম। গেড়ুর একটি হাত নেই। গেড়ুর ঘরে বৃদ্ধ বাবা, বৌ আছে। লকডাউনে গেড়ুর সামান্য বেতনের কাজটা নেই। খিদে কি বোঝে লকডাউন? বাড়িতে মেয়ে-ছেলে না খেয়ে তাই গেড়ু এখন রাস্তা-ধারে বড় মহুল গাছটার নীচে বসে ফুল কুড়ায়। এক ব্যাগ মহুল ফুল কোন একজনকে দিলে সে গেড়ুকে কিছু টাকা দেয়।



২.

মৈনি ক্ষেপি। একজন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা; নামোপড়ায় থাকে। মানসিক ভারসাম্যহীন। মাচিস বাক্সর মতো একটা ঘরে বেঁচে আছে মৈনি। ঘরভর্তি পুটুলি। মৈনি সারাদিন পুটুলি বানায়। মানুষের কাছে হাত পেতে পেট চলে।

লকডাউনে রাস্তা-ঘাটে মানুষ নেই। খিদে পেলে মৈনি কার কাছে হাত পাতবে?

সতীন্দ্র অধিকারী ,কবিতা,সাহিত্য এখন শীতসংখ্যা ২০২০-২১,

 



 

উল্লাস 

 

বৈভবের আশ্চর্য প্রতিবেদন সাজিয়ে 

রাখছে কেউ আর একটা দুটো 

মানুষ ঘুরছে 

              আর ঘুরছে 

 

তুমি কি ছুঁয়ে ফেলতে চাইছো আকাশ? 

 

 তাহলে ভালোবাসতে পারো আমার জেঠুর ছেলেকে!

Wednesday 20 January 2021

রাজীব মৌলিক, কবিতা,সাহিত্য এখন শীতসংখ্যা ২০২০-২১,

 






শেষ রাতে


শেষ রাতে তার ঘরে ঈশ্বর এসেছিলেন

তখন সে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন

তাই তাঁকে বসতে দিতে পারেনি

কিছুই দিতে পারে নি


কেন না তিনি ঈশ্বর 

তাঁকে বসতে দেওয়ার মতো পবিত্র অলঙ্কার 

তার;


শেষ রাতেই বিক্রি হয়ে গিয়েছিল

অভিজিৎ দাসকর্মকার , কবিতা,সাহিত্য এখন শীতসংখ্যা ২০২০-২১,



 রাবার জমিয়েছি চামড়ার নীচে




উত্তম পুরুষকে অন্ধ বলছো?  অন্য ইন্দ্রিয় দিয়ে দ্যাখো শরীরে ছেয়ে গ্যাছে বিয়োগচিহ্ন। 

এখনো গাছ কামিয়েই রাবার জমিয়েছি চামড়ার নীচে। তৃতীয় গতিপথে সূত্র লিখছে নিউটন নামক ১টি আগন্তুক কণা।
এগুলি অমুলক কল্পনাবাদ। 
                      সবটাই  শুনলেন তাহলে! 

চারিদিকে অভ্যস্ত মস্তিষ্ক এবং পিঠ। পিছু ধাওয়া করছে ধ্যানমগ্ন তর্জনী। কালভার্টের তলা দিয়ে 
পাওডার
    অবশ্যম্ভাবী ডিজিটাল রাস্ট্র
       হিপনোটিক ভাষণ জড়বস্তুর দিকে ঘুরেছে,  এবং মঞ্চের উপর প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে বুর্জোয়া রং।  
মধ্যম পুরুষকে থার্মোমিটার দিয়েছি। পরিস্থিতিকে কেলভিনে মেপো। শ্রেণিগত ভাবে জলের স্ফুটনাং কার্যত পাস্কেলচাপে ভুগছে।

প্রথম পুরুষ এখন কোন উভচর পথে বিশেষণহীন হয়ে দাঁড়িয়ে থেকো, রাস্তার ওদিকে বিবস্ত্র হচ্ছে মানসিকতা। চুপ।
এখন শুধু দ্যাখো...

বান্ধবী তোমার ছায়ার সাথে দাম্পত্য করার ইচ্ছে




অতএব প্রতিটি ঘটনার বিশেষ বিশেষ অংশগুলো তেজস্ক্রিয়, মিররইজম বা ডি এন এ চেন,যাইহোক_____
      অক্সিজেনের উপর নির্ভর করে নগ্ন হয়েছে ঋতুমতী শরীরের দ্বিতীয়দিনেরদশা। তার সাথে সমাজের বহুতলি রৈখিকতা, স্ট্রিং-ছন্দ এবং 
                     পরিষেবা-সীমার বাইরের বান্ধবীর সুডোল অবয়বের ভিতর চোখ, অঙ্গুরীমাল হয়ে যাচ্ছে। 
এভাবে পালটানো আদৎ মেধার অপচয় বা শীঘ্র বায়োলজির পতন। তবুও
             আমরা ঘটা করে রোদ্দুরের ট্যাঁড়া সকালে পতাকার দড়িতে টান দিয়ে উত্তোলন করবোই। 

বান্ধবী তোমার ছায়ার সাথে দাম্পত্য করার ইচ্ছে____

গত দু'বছর ধরে  আগষ্টমাসগুলোয় কিছুক্ষণ পরপর লালামিশ্রিত গর্জন করেছে শব্দভাঙন। রাতের সহশয্যায় স্খলন জল ভেঙেছে , তাই
       পৃথিবীর আয়তনের দিকে তাকালে পুরুষকে বিষণ্ন মগজের হিসেব না-মেলার সরীসৃপ মনে হয় ————


কেরোসিন তেলের সর্বনাম ধরে 
 
 

স্পষ্ট হয়ে উঠছে নিদারুণ সরীসৃপ আচরণের বিকেল 
   বুঝতে পারছি passive voice-এ বিবর্তিত গলার জৌলুসে হাট করে খুলে যাচ্ছে ঘরের ভিতরের ক্যাপিটালিজম 
  হাত-পা ছড়িয়ে গণতন্ত্র জড়ো করছি। গত মাসে ৫ কেজি স্বর্ণ চাল দিয়েছিলো ক্রেতা সমিতি।

আরও অনেক noun, pronoun এবং ১ মিটার দুরত্বে আগন্তুকের fill in the blanks_____
    এসব বিজ্ঞাপন বিরতিতে কথা বলতে বলতে ক্রোমোজমের সলতে উসকে দিলাম। আয়নার সামনে নিজেকে প্রতিবিম্বিত হতে দেখছি। শরীরে উলঙ্গ সূত্রগুলো এদিকে ওদিকে ছুটছে
  পাপোশ নেই। পোশাক নেই। অন্য শরীরের সাথে সুদূরপ্রসারী কোনো মিল নেই। 

অথচ আঙুলের রোমিওপনায় খাতায় শুয়ে থাকা ক্লান্ত উপপাদ্যগুলো খুশবুদার হয়ে উঠেছে,  আর
  এই শরীর। চুলে দেয়া শ্যাম্পু। 
সব ২লিটার কেরোসিন তেলের সর্বনাম ধরে প্রতিবাদের মিমিক্রি করে চলেছে ___



জেনারেশন-গ্যাপ তৈরি করে চলেছে

স্বতন্ত্র নদী আর জলে ঝকমকে ধস্তাধস্তি 
চারিদিকে গুপ্তস্রোত শতাব্দীর হাত ধরে চলছে। শতাব্দী কোন প্রোটাগনিস্ট নয়। ১টি সহজাত প্রেম, যার
  ২টি চোখ, ১টি গোল বৃদ্ধ টিপ, 
   ২টি আনন্দদায়ক স্তন, অওরত কী খুশবু, তারপর পেট
পেটে ৩টি সামুদ্রিক ঢেউ, 
ধূস শালা! মাথার মধ্যে হাংরি জেনারেশন-গ্যাপ তৈরি করে চলেছে। 

এর থেকে 
আমার অভিশাপগুলো অনেক ফোর্সফুল। রাতের ভারি ভারি কথাগুলো যদিও সকালে ফালতু হয়ে যায়। 
আজন্ম কপালের লিখনগুলো ক্যামন না-জানা, না-বোঝাই রয়ে গ্যালো, কারণ 
এর ভাষা বাংলায় নয়, অ্যালিয়াম-রসের___


*



চন্দন বাসুলী,কবিতা,সাহিত্য এখন শীতসংখ্যা ২০২০-২১,


 



 
 
শুকনো কাশি ও বার্ধক্য
 

যেভাবে অসাধু অন্ধকার নেমে আসে 
                                      গেরস্থের উঠোনে 
ঠিক সেভাবেই বাবার জটিল বার্ধক্য
খুস-খুস শুকনো কাশিতে 

ক্ষেতের এক কোণে রেখে আসা রোমাঞ্চকর সন্ধ্যা
ফিরে আসে একটা কষ্টের রাত হয়ে 
                                          আস্তে- আস্তে,গোপনে 
খড়ের চাল আর কড়িকাঠের ভিতর দিয়ে 
চুপি-চুপি প্রবেশ করে হেঁসেল থেকে শোবার ঘরে 

সারাদিনের হাড়ভাঙা খাটুনির পর 
আমার বাবা কখন যে পরম ঘুমে ঘুমিয়ে পড়ে 

আলসারে ভুগতে থাকা মা টেরও পায় না !

Sunday 10 January 2021

সুমন মল্লিক,কবিতা,সাহিত্য এখন শীতসংখ্যা ২০২০-২১,

 

দু’টি কবিতা

 

 

একটি কবিতার জন্মকথা

 

টেবিলে বসতেই, ঠিক সামনে

শাদা কাগজের ওপর

হাঁটু মুড়ে বসল ফেরারি যুবক৷

বুকে সম্মোহনের অঙ্গার,

হাতে অদৃশ্য নীলমণি ক্ষত...

মুখ তুলে হঠাৎ সে হাসল–

সে-হাসি লক্ষ কান্না দিয়ে বাঁধা৷

তারপর বেশ খানিকটা সময়

কথাবার্তা চলে – স্মৃতিচারণ ও

ভাবের আদান-প্রদান৷

এইসব চলতে চলতেই আচমকা

সে উধাও হয় আর আমি

অবাক হয়ে দেখি, শাদা কাগজটি

ভরে উঠেছে ভেজা ভেজা অক্ষরে৷

 

 

একটি স্বপ্নের জন্মকথা

 

শ্বেতপদ্মের মতো মায়াবী মাতল গ্রীবা

গ্রীবায় ছোঁয়ানো আঙুল পুড়ে হয় ছাই

ছাই দিয়ে সাজানো এই জীবন-গরাদ

গরাদের মাঝে উড়ে বেড়ায় প্রাণপাখি

পাখির চোখের সিন্দুকেই আছে মুক্তি

মুক্তির উন্মথনগুলি মুছে যায় অশ্রুতে

অশ্রু একমাত্র সত্য, অশ্রু সত্য মুকুর

মুকুরে লুকনো আছে আরেকটি মুকুর 

 

Friday 8 January 2021

সুবিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়,কবিতা,সাহিত্য এখন শীতসংখ্যা ২০২০-২১,

 
 

 
 

 

 

প্রকৃতি বিষয়ক

যারা যারা সাঁকোটা পেরিয়ে গ্যাছে , অথবা যারা চেয়েছিল কিন্তু পেরোতে পারেনি। তাদের সকলের নাম মনে রাখবে নদী। কারণ তাদের সকলেরই ছায়া পড়েছে। কতটা সময় ধরে সেটা বিবেচ্য নয় কেবল। অভিযাত্রীর একটা গোটা ক্যারাভ্যান চলে গ্যাছে মরু পেরিয়ে। সকলেই যে ওপারে পৌঁছেছে এমন নয়। তবু যারা ওয়েসিসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়েছে , পেড়ে খেয়েছে মিষ্টি খেজুর , ছায়া ঢাকা সরোবরের নীল জল অথবা যারা মরীচিকা দেখে উপুড় হয়েছে বালির ওপর কিংবা  চোরাবালির নীচে আস্তানা গেড়েছে চিরতরে , তাদের সকলের জন্যই মরুভূমি আজ খুশি। লিখে রেখেছে এক একটা বালিয়াড়ির ছাদ বা তলায় তাদের প্রত্যেকের নাম অতি যত্ন করে , মনে রেখ এটা।

 

সিংহল যাত্রা


সুচয়ন তুলে আন ফুল!

দ্রাবিড় কোমরে গাঁথা মালা
নিতম্বে স্খলিত বসন।

সুচয়ন তুলে আন ফুল!

দ্রাবিড় অধরে দেখ রাঙা তাম্বুল
ঈষৎ রক্তাভ চোখ।

সুচয়ন তুলে আন ফুল!

অষ্টোত্তর শত ইন্দিবর , 
খোঁজ সহস্র সরোবর অযুত যোজন দূর।

সুচয়ন তুলে আন ফুল!

বাঁধ সাঁকো নীল অর্ণব
বানর সেনানী যত লাগে পাবে।

সুচয়ন তুলে আন ফুল!

অকাল বোধন যাত্রা
চলেছেন

দাশরথী রঘুবীর , বহিছে মৃদু মন্দ সমীর , 
দিনমণি গেল অস্তাচলে।

© সুবিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

অনুপম দাশশর্মা ,কবিতা,সাহিত্য এখন শীতসংখ্যা ২০২০-২১,

 




অভ‍্যেস উঠে আসবেই জল পেরিয়ে

 

যেন কেউ নেই, আর কেউ নেই...

এমন ভাবাবেগে তুমি সাজাও বাক‍্য-ব‍্যবহার

তীব্র শ্লেষে গৃহহীন করে দিচ্ছ অপছন্দের লেখাসমূহ

এই দৃশ্যের কাছে কবিতা চোখের জল ফ‍্যালে

 

তুমি যে ঝোপঝাড় অতিক্রম করে এসেছ

সেখানে আহার্য পায় না আর পাখিদের দল

পুড়িয়ে ফেলেছ খসড়া পান্ডুলিপির

 

তাও আমি বসে থাকি অক্ষরের ঘরে

ধারণা থেকে ঘুমন্ত কবিতা থাকে কয়েক কদম দূরে